পানামা ও সুয়েজ: বিনামূল্যে নৌ চলাচলের দাবি ট্রাম্পের!

ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি এক সময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সম্প্রতি এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি আমেরিকার বাণিজ্যিক এবং সামরিক জাহাজগুলোকে পানামা ও সুয়েজ খাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার शुल्क (शुल्क) দিতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

শুধু তাই নয়, তিনি দ্রুত এই বিষয়টি দেখার জন্য তার প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই পানামা খালের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার কথা বলে আসছেন। তবে এবার তিনি সুয়েজ খালের গুরুত্বের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

তার মতে, আমেরিকার জাহাজগুলোকে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ ব্যবহারের জন্য কোনো ধরনের ফি দিতে দেওয়া উচিত নয়। ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র না থাকলে হয়তো এই খালগুলোও থাকত না।

তিনি তার সামাজিক মাধ্যমে আরও উল্লেখ করেন যে, তিনি তার পররাষ্ট্র সচিবকে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

এদিকে, পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো, ট্রাম্পের সরাসরি কোনো উল্লেখ না করে জানান যে, পানামা খাল কর্তৃপক্ষ (এসিপি) এই খালের টোল ফি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

তিনি আরও বলেন, এর বিপরীত কোনো চুক্তি নেই। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন উভয়ই পানামা খালের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারকারী।

অন্যদিকে, সুয়েজ খাল, যা ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি প্রধান জলপথ, তার গুরুত্ব অপরিসীম। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে নৌ-চলাচলে বাধা সৃষ্টি করার আগে এই খাল দিয়ে বিশ্বের প্রায় ১০ শতাংশ সমুদ্র বাণিজ্য সম্পন্ন হতো।

ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধের পর জাহাজগুলোর ওপর হামলা চালানো শুরু করে, যার ফলে অনেক জাহাজকে দীর্ঘ এবং ব্যয়বহুল পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে।

এর ফলস্বরূপ, মিশরের সুয়েজ খালের রাজস্ব ৬০ শতাংশ কমে গেছে, যা প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সমান।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার অবশ্য ইতোমধ্যে হুতি বিদ্রোহীদের অবস্থানের উপর আক্রমণ শুরু করেছে। জানা যায়, গত এক মাসে এই আক্রমণ আরও তীব্র হয়েছে।

ট্রাম্প বলেছেন, যতক্ষণ না হুতিরা জাহাজ চলাচলের জন্য হুমকি হিসেবে থাকছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সামরিক অভিযান চলবে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি খালের ভবিষ্যৎ নিয়ে ট্রাম্পের এই মন্তব্য বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এই ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্যিক লেনদেনে কি প্রভাব ফেলবে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *