যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী বিতাড়ন সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার বিশেষ অধিকার’ প্রয়োগ করেছে দেশটির বিচার বিভাগ। এই পদক্ষেপের কারণে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরagua’ গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিতাড়িত হওয়া অভিবাসীদের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এমনটাই জানা গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের এই সিদ্ধান্ত বিচারক জেমস বোয়াসবার্গের কাছে তথ্য গোপন করার একটি কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। বোয়াসবার্গ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ‘এলিয়েন এনিমি অ্যাক্ট’ প্রয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই আইনের অধীনে জরুরি পরিস্থিতিতে বিদেশি নাগরিকদের বিতাড়িত করার ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকে।
আদালতে বিচারক জানতে চান, গত ১৫ই মার্চ বিতাড়ন ফ্লাইটের সময়সূচী এবং কারা যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টোডি থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা বলছেন, এই তথ্য প্রকাশ করা হলে তা জাতীয় নিরাপত্তা ও বৈদেশিক সম্পর্ককে ঝুঁকিতে ফেলবে। তাদের মতে, এর ফলে ভবিষ্যতে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ব্যাহত হতে পারে।
তাছাড়া, ফ্লাইট ট্র্যাকিং সম্পর্কিত কোনো তথ্য প্রকাশ পেলে তা সন্ত্রাসীদের কাজে লাগবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক আইনজীবী মার্ক জাইদ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “সরকার সম্ভবত অন্য কোনো উপায় না পেয়ে এই বিশেষ অধিকারের আশ্রয় নিয়েছে।”
রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার এই বিশেষ অধিকারের বিষয়ে অনেক আগে থেকেই বিতর্ক রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রায়ই এমন তথ্য গোপন করার চেষ্টা করা হয়, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে। তবে সমালোচকরা বলছেন, অনেক সময় সরকার নিজেদের অস্বস্তিকর তথ্য গোপন করার জন্য এই অধিকার ব্যবহার করে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট অতীতেও সরকারের এই ধরনের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তবে, সমালোচকদের মতে, এর ফলে আইনের শাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। কারণ, সরকার যদি কোনো তথ্য গোপন করে, তাহলে আদালত বা সাধারণ মানুষ কিভাবে বুঝতে পারবে যে সরকার আইন মেনে চলছে কিনা?
বর্তমানে বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ এই মামলার শুনানিতে সিদ্ধান্ত নেবেন যে সরকারের এই ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার বিশেষ অধিকার’ প্রয়োগ করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত। তিনি হয়তো সরকারের কাছে তথ্যগুলো গোপনভাবে জমা দিতে বলতে পারেন, যাতে তিনি তা যাচাই করতে পারেন। তবে মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ এখনো অনিশ্চিত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন