আতঙ্কের ছবি! ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ধূলিসাৎ হোয়াইট হাউসের ‘পূর্ব উইং’!

হোয়াইট হাউজের পূর্ব দিকের অংশটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তের জেরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, যা ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের ধরনকেই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে।

বিশাল এক বলরুম তৈরির পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা অনেকের কাছে ঐতিহ্য ভাঙার শামিল।

হোয়াইট হাউস, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন, শুধু একটি ভবন নয়, বরং এটি আমেরিকার ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী। এর প্রতিটি দেওয়াল যেন বিভিন্ন সময়ের গল্প বলে।

পূর্ব দিকের অংশটি ছিল অপেক্ষাকৃত নিচু এবং এখানে বিভিন্ন দপ্তর ছিল, বিশেষ করে ফার্স্ট লেডির জন্য নির্ধারিত স্থানগুলো। এই অংশে একসময় বসবাস করতেন জ্যাকুলিন কেনেডি, ন্যান্সি রেগান এবং এলিনর রুজভেল্টের মতো প্রভাবশালী নারীরা।

কিন্তু ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই ঐতিহ্যপূর্ণ অংশটি ভেঙে সেখানে তৈরি হবে বিশাল এক বলরুম।

শোনা যাচ্ছে, এই বলরুমের আয়তন হবে প্রায় ৯০,০০০ বর্গফুট, যা মূল হোয়াইট হাউসের প্রায় দ্বিগুণ। এই বিশাল আকারের বলরুম তৈরি করতে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।

এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন ডেমোক্রেট এবং ইতিহাসবিদরা। তাদের মতে, ট্রাম্প যেন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন।

তারা মনে করেন, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ধ্বংস প্রমাণ করে ট্রাম্পের ক্ষমতা প্রদর্শনের আকাঙ্ক্ষা কত তীব্র। কেউ কেউ বলছেন, এটা অনেকটা ক্ষমতার অপব্যবহারের শামিল।

যদিও ট্রাম্পের সমর্থকরা বলছেন, এর আগে অনেক প্রেসিডেন্টই হোয়াইট হাউসের সংস্কার করেছেন।

উদাহরণস্বরূপ, ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট বর্তমান ওভাল অফিস তৈরি করেন। আবার হ্যারি ট্রুম্যান পুরো অভ্যন্তরীণ কাঠামো ভেঙে নতুন করে তৈরি করেছিলেন। তবে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ নজিরবিহীন।

অন্যদিকে, বলরুম তৈরির ঘোষণার পর অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, যখন সাধারণ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয়ভার সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন এই বিশাল প্রকল্প কতটা যুক্তিযুক্ত?

কেউ কেউ মনে করছেন, এই ধরনের প্রকল্প সম্ভবত ক্ষমতাধরদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের প্রমাণ। আর্জেন্টিনার জন্য ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ সাহায্য করার সিদ্ধান্তও এক্ষেত্রে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ সম্ভবত ক্ষমতা প্রদর্শনের একটি দৃষ্টান্ত। অনেকেই মনে করেন, এর মাধ্যমে তিনি নিজের বিশালতা এবং ঐশ্বর্য ফুটিয়ে তুলতে চাইছেন।

তবে, এমনও হতে পারে, ট্রাম্প হয়তো সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি সুন্দর স্থান তৈরি করতে চান, যেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে।

তবে, সমালোচকদের মতে, হোয়াইট হাউজের পূর্ব দিকের অংশটি ভেঙে ফেলার ঘটনা ট্রাম্পের স্বেচ্ছাচারী মানসিকতারই প্রতিফলন। তারা মনে করেন, এর মাধ্যমে তিনি জনগণের অনুভূতিকে উপেক্ষা করছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *