ডিমের দাম কমার কৃতিত্ব ট্রাম্পের! আপনি কি কম দামে ডিম কিনছেন?

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার সম্প্রতি দাবি করেছে যে, তাদের নীতির কারণে আমেরিকায় ডিমের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তবে বাজারে ডিমের দাম কমার বদলে বাড়ছে, এমনটাই দেখা যাচ্ছে।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ডিমের দাম নিয়ে তৈরি হয়েছে এই নতুন বিতর্ক। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডিমের পাইকারি দাম কমছে, যা সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের ফল।

তারা বলছেন, গত ২৪শে জানুয়ারী থেকে পাইকারি বাজারে ডিমের দাম ৪৭ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। কিন্তু সাধারণ ক্রেতাদের জন্য বাজারে ডিমের দাম এখনো কমেনি, বরং বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, পাইকারি বাজারে এক ডজন ডিমের দাম বর্তমানে ৪.১৫ ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম।

কিন্তু খুচরা বাজারে, অর্থাৎ দোকানে, ভোক্তারা এখন প্রতি ডজন ডিমের জন্য প্রায় ৫.৯০ ডলার দিচ্ছেন। এমনকি ফেব্রুয়ারী মাসে, ডিমের দাম ভোক্তাদের জন্য ১০.৪% এবং ব্যবসায়ীদের জন্য ২৮.১% বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম কমলেও, খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়তে সময় লাগে। দোকানগুলো আগের লোকসান পুষিয়ে নিতে চায়, তাই তারা ডিমের দাম কমাচ্ছে না।

এছাড়া, ডিমের চাহিদা এবং সরবরাহ, বার্ড ফ্লু রোগের প্রাদুর্ভাব ও আমদানি-রপ্তানির মতো বিষয়গুলোও দামের উপর প্রভাব ফেলে।

বার্ড ফ্লু (avian flu) একটি মারাত্মক রোগ যা মুরগিসহ অন্যান্য পাখির শরীরে দেখা দেয়। এই রোগের কারণে ডিম উৎপাদনকারী পাখির সংখ্যা কমে গেলে ডিমের সরবরাহ কমে যায়, ফলে দাম বাড়ে।

২০১৬ সালে বাংলাদেশেও বার্ড ফ্লু দেখা দিয়েছিল এবং এর কারণে পোলট্রি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বার্ড ফ্লু মোকাবিলায় একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, তবে এর ফল এখনো পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, মেক্সিকো ও তুরস্ক থেকে ডিম আমদানি করা হচ্ছে, যা সরবরাহের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করবে। ডিমের চাহিদা মূলত নির্ভর করে উৎসবের উপর।

সামনে ইস্টার ও পাসওভারের মতো উৎসব থাকায় ডিমের চাহিদা বাড়বে। তবে এই সময়ে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা থাকে, কারণ পরিযায়ী পাখিরা এই রোগের বিস্তার ঘটায়।

যদিও এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের, তবে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদেশের যোগসূত্র রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লে বা কমলে, তার প্রভাব বিভিন্ন দেশেও পড়তে পারে।

ডিমের দামের এই বিষয়টি সরবরাহ ব্যবস্থা, বাজারের স্থিতিশীলতা এবং খাদ্য নিরাপত্তা—এসবের গুরুত্ব তুলে ধরে। তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *