ট্রাম্পের সাম্রাজ্য স্বপ্ন: প্রতিশ্রুতি রাখতে হিমশিম

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু পদক্ষেপ এবং পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি বিভিন্ন সময়ে দেশ দখলের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, যা অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে।

সম্প্রতি তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কিছু ক্ষেত্রে তিনি তার প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন।

গ্রিনল্যান্ড দখলের বিষয়ে ট্রাম্পের আগ্রহ ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি ডেনমার্কের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক ভালো না হওয়ার কারণ হিসেবে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেন।

যদিও ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির জন্য দীর্ঘদিন ধরে অনুমতি দিয়ে আসছে। তবে গ্রিনল্যান্ডের স্থানীয় বাসিন্দারা ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন।

শুধু গ্রিনল্যান্ড নয়, পানামা খাল এবং গাজা উপত্যকা নিয়েও ট্রাম্পের ভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে। পানামা খালের বিষয়ে চীনের সঙ্গে একটি বিতর্কিত সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, যেখানে তিনি চীনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন।

অন্যদিকে, গাজা উপত্যকাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি সেখানে একটি বিলাসবহুল রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনার কথাও জানান। তার এই প্রস্তাব মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়েও তৈরি হয়েছে জটিলতা। ট্রাম্প কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন এবং দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

এর প্রতিক্রিয়ায় কানাডিয়ানরা তাদের পণ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।

ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের বিষয়ে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গিও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে একটি বৈঠকে মিলিত হন, যেখানে দুই নেতার মধ্যে মতবিরোধ দেখা যায়।

ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি সহানুভূতি দেখালেও ইউক্রেনকে পর্যাপ্ত সমর্থন দিতে দ্বিধা বোধ করেছেন।

অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে, ট্রাম্প তার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে একটি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। এর অংশ হিসেবে অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।

তবে, এই পদক্ষেপ প্রত্যাশিত ফল দেয়নি।

এছাড়াও, এল সালভাদরে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিতর্কিত একটি কারাগারে বিতাড়িতদের পাঠানোর সিদ্ধান্ত এবং এর আইনি জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এই ঘটনার জেরে, ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক কাঠামোর প্রতি অবজ্ঞা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মোটকথা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পরবর্তী সময়ে গৃহীত কিছু সিদ্ধান্ত এবং পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার সাম্রাজ্য বিস্তারের আকাঙ্ক্ষা এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থতা নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *