মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (ইপিএ) কয়লা এবং গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে নির্গত কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের বিদ্যমান নিয়মাবলী বাতিল করার একটি প্রস্তাব তৈরি করছে। এই পদক্ষেপ নিলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী যে প্রচেষ্টা চলছে, তাতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের বরাত দিয়ে জানা যায়, এই প্রস্তাবটি কার্যকর হলে দূষণ কমানোর ক্ষেত্রে কয়েক দশকের অগ্রগতি ব্যর্থ হতে পারে।
ইপিএ-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা একটি নতুন নিয়ম তৈরির পরিকল্পনা করছেন। তবে, আন্তঃসংস্থা পর্যালোচনা শেষ হওয়ার পরেই এটি প্রকাশ করা হবে।
প্রস্তাবিত এই নিয়মটি কার্যকর হলে, কয়লা এবং গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে নির্গত কার্বন নিঃসরণের ওপর ফেডারেল সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। এমনটা হলে, একদিকে যেমন জলবায়ু দূষণ বাড়বে, তেমনই অন্যদিকে পুরোনো, ব্যয়বহুল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু রাখতে হতে পারে, যা হয়তো বিদ্যুতের দামও বাড়িয়ে দেবে।
এই প্রস্তাবটি বাইডেন প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপের সম্পূর্ণ বিপরীত। বাইডেন প্রশাসন গত বছর নতুন কিছু নিয়ম তৈরি করেছিল, যার মাধ্যমে কয়লা এবং নতুন প্রাকৃতিক গ্যাস কেন্দ্রগুলোকে ২০৩২ সালের মধ্যে তাদের কার্বন নিঃসরণ ৯০ শতাংশ কমাতে বা তা ধরে রাখতে বাধ্য করার কথা বলা হয়েছিল।
ইপিএ-এর একজন মুখপাত্রের মতে, তারা ২০১৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি সিদ্ধান্তের কথা বিবেচনা করছেন, যেখানে ওবামা-আমলের ‘ক্লিন পাওয়ার প্ল্যান’ বাতিল করা হয়েছিল।
মুখপাত্র আরও জানান, বাইডেন প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপগুলোও সেই সিদ্ধান্তের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এবং এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে সাশ্রয়ী মূল্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে।
ইপিএ মুখপাত্র যোগ করেন, “পর্যালোচনা শেষে এই প্রস্তাবটি প্রকাশ করা হবে। প্রস্তাবটি ইপিএ-এর প্রশাসক স্বাক্ষর করার পরেই তা কার্যকর হবে।”
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর দূষণ বিশ্বব্যাপী মোট দূষণের মাত্র ৩ শতাংশের মতো, তবুও এই ধরনের পদক্ষেপ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইকে দুর্বল করতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থার এই পদক্ষেপের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আরও কঠিন হয়ে পড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তাই, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা খুবই জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন