ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিন: বিতর্ক, পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক প্রভাব
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রম ছিল নানা আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
এই সময়কালে ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন নীতি পরিবর্তন, নির্বাহী আদেশ জারি, এবং আদালতের সম্মুখীন হয়েছে।
ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প আগের সরকারের অনেক নীতি পরিবর্তন করতে শুরু করেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পদক্ষেপগুলো বাতিল করা। তিনি ফেডারেল সরকারের কর্মীদের সংখ্যা কমানোর জন্য কাজ শুরু করেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকল্পের তহবিল কাটছাঁট করেন।
এছাড়াও, অভিবাসন নীতিতে কঠোরতা আনা হয়, যার ফলস্বরূপ সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয় এবং আশ্রয় প্রার্থীদের জন্য নিয়মকানুন কঠিন করা হয়।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল শুল্ক বৃদ্ধি। তিনি চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর মতো দেশের থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন, যা বিশ্ব বাণিজ্যকে নতুন করে প্রভাবিত করেছে।
যদিও এই পদক্ষেপের ফলে কিছু ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় উৎপাদনকারীরা সুবিধা পেতে পারে, তবে এর কারণে পণ্যের দাম বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে, যা সাধারণ ভোক্তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
ট্রাম্পের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত আদালতের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তিনি নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধানের কিছু ধারাকে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন, যা নিয়ে আইনজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় আদালত ট্রাম্পের কিছু পদক্ষেপের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে। উদাহরণস্বরূপ, ফেডারেল কর্মীদের ছাঁটাই এবং শিক্ষা বিষয়ক অনুদান বাতিল করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও আদালতে মামলা হয়েছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প তাঁর ক্যাবিনেট গঠনে তুলনামূলকভাবে দ্রুততা দেখিয়েছেন। তবে, তাঁর প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো লোক নিয়োগ করা হয়নি।
এই বিষয়টি প্রশাসনের কার্যকারিতা এবং নীতি বাস্তবায়নে প্রভাব ফেলতে পারে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ট্রাম্পের নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ এবং আলোচনার বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
এছাড়া, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি তাঁর বিশেষ মনোভাবও অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
ট্রাম্পের এই ১০০ দিনের কার্যক্রম দেশের অভ্যন্তরে যেমন পরিবর্তন এনেছে, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তাঁর নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত এবং নীতির ফলস্বরূপ, ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে কী ধরনের পরিবর্তন আসে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন