ডিসি-তে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন: আশ্রয় শহর কি তবে নীরব?

ওয়াশিংটন ডিসি: ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে আশ্রয় শহর নিয়ে উদ্বেগে অভিবাসীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি-র অভিবাসন নীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। শহরটি নিজেদের ‘আশ্রয় শহর’ হিসেবে ঘোষণা করলেও, ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে অভিবাসন নীতি কঠোর হওয়ায় সেই অবস্থানে পরিবর্তন আসার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের নীরবতা এবং অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসি-র মেয়র একসময় শহরটিকে গর্বের সঙ্গে আশ্রয় শহর বলতেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকছেন। এমন পরিস্থিতিতে অভিবাসন অধিকার কর্মীরা উদ্বিগ্ন।

তাদের মতে, স্থানীয় প্রশাসনের এই পরিবর্তন অভিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের কারণ।

শহরের অনেক অভিবাসী, বিশেষ করে যারা অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা (টিপিএস) নিয়ে বসবাস করছেন, তারা এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। টিপিএস তাদের কাজের অনুমতি দেয় এবং তাদের বিতাড়িত করা থেকে রক্ষা করে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন এই সুরক্ষা বাতিল করার পরিকল্পনা করছে বলে শোনা যাচ্ছে। এতে করে অনেকের মধ্যে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আশ্রয় শহর কী, তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। সাধারণভাবে, এটি এমন একটি শহর যা ফেডারেল সরকারের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে অভিবাসীদের সুরক্ষা দিতে চেষ্টা করে।

এর অর্থ হলো, স্থানীয় পুলিশ অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে নাও চাইতে পারে। তবে এই ধরনের নীতির বাস্তবায়ন সব সময় একই রকম হয় না এবং বিভিন্ন শহরে এর ভিন্নতা দেখা যায়।

ওয়াশিংটন ডিসি-র ক্ষেত্রে, ট্রাম্প প্রশাসন শহরের অভিবাসন নীতির উপর কড়া নজর রাখছে। শহরটিতে ফেডারেল এজেন্সির অভিযান বেড়েছে, যা অভিবাসীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করেছে।

অনেকে মনে করছেন, শহরের নেতারা সম্ভবত ফেডারেল সরকারের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চাইছেন না, তাই তারা কিছুটা নীরবতা অবলম্বন করছেন।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের এই নীরবতা নিয়ে অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। অনেকে মনে করেন, তাদের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

এর ফলে, অভিবাসীরা তাদের নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওয়াশিংটন ডিসি-র অবস্থান ফেডারেল সরকারের সঙ্গে একটি জটিল সম্পর্কে আবদ্ধ। এখানকার স্থানীয় সরকার চাইলেও ফেডারেল নীতির বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারে না।

এমন পরিস্থিতিতে তারা একটি কৌশল হিসেবে ‘নীরব আশ্রয়’ নীতি অনুসরণ করতে পারে।

তবে অভিবাসন অধিকার কর্মীরা মনে করেন, এই ধরনের কৌশল অভিবাসীদের মধ্যে ভীতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাদের মতে, স্থানীয় প্রশাসনের উচিত অভিবাসীদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করা।

বর্তমানে, ওয়াশিংটন ডিসি-র অভিবাসী সম্প্রদায় তাদের অধিকার রক্ষার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বিক্ষোভ করছে এবং স্থানীয় নেতাদের কাছে তাদের উদ্বেগ জানাচ্ছে।

তাদের মূল চাওয়া হলো, শহরটি যেন তাদের আশ্রয়স্থল হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *