যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু বিতর্কিত নির্বাহী আদেশ নিয়ে দেশটির আদালতে চলমান আইনি লড়াই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বিভিন্ন সময় ট্রাম্পের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কারণে বিচার বিভাগীয় জটিলতা বাড়ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
খবর আল জাজিরার।
সম্প্রতি, ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন বিষয়ক একটি নীতি ঘোষণা করে, যেখানে ভেনেজুয়েলার নাগরিকসহ অন্যদের বিতাড়িত করার কথা বলা হয়। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন অনেকে।
ওয়াশিংটন ডিসির একটি জেলা আদালত প্রথমে এই বিতাড়ন প্রক্রিয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। তবে পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় বাতিল করে দেয়, ফলে বিতাড়ন প্রক্রিয়াটি চালু থাকে।
আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, সামরিক বাহিনীতে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা এবং তাদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করা। এছাড়াও, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব লাভের ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হয়, যা আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত একটি আদেশের বিরুদ্ধে একাধিক রাজ্যের করা মামলার প্রেক্ষিতে আদালত জানায়, এই সিদ্ধান্ত সংবিধানের পরিপন্থী।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত। ট্রাম্প প্রশাসন সরকারি কার্যক্রমের ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে এমন পদক্ষেপ নেয়।
তবে আদালত এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এবং এটিকে কংগ্রেসের ক্ষমতা খর্ব করার সামিল বলে উল্লেখ করে। এমনকি, সরকারের কর্মপরিধি কমানোর লক্ষ্যে কয়েক হাজার ফেডারেল কর্মীকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তও আদালতের সমালোচনার শিকার হয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, বিচার বিভাগের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করার প্রবণতা দেখা গেলে তা দেশের আইন ও অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এমন পরিস্থিতিতে, অনেকে মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত একটি সাংবিধানিক সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়েও নির্বাহী আদেশ নিয়ে আইনি জটিলতা দেখা গিয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি অতীতের চেয়ে ভিন্ন।
কারণ, এক্ষেত্রে শুধু আইনের লঙ্ঘনই হচ্ছে না, বরং লঙ্ঘনের সংখ্যাও অনেক বেশি। এখন দেখার বিষয়, আদালত এবং ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে এই টানাপোড়েন কোন দিকে মোড় নেয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা