যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম রাসূল দেশে ফিরেই বীরোচিত সংবর্ধনা পেয়েছেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে তাঁকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
এরপর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরলে বিমানবন্দরে হাজারো মানুষের উষ্ণ অভ্যর্থনা ও সংহতি দেখা যায়।
রবিবার কেপটাউন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাষ্ট্রদূত রাসূল ও তাঁর স্ত্রী রোসিদাকে সংবর্ধনা জানাতে বহু মানুষের সমাগম হয়। তাদের নিরাপদে বের করে আনতে পুলিশের সহায়তা নিতে হয়।
এসময় রাষ্ট্রদূত সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কোনো ব্যক্তিকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করার অর্থ হলো তাকে অপমান করা। কিন্তু যখন এমন উষ্ণ সংবর্ধনা পাওয়া যায়, তখন আমি আমার ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’র খেতাবকে সম্মানের প্রতীক হিসেবে পরিধান করি।’
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছায় দেশে ফেরা হয়নি, তবে আমরা কোনো অনুশোচনা নিয়ে ফিরছি না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের ওপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ আফ্রিকাকে শাস্তি দিয়েছে এবং দেশটির বিরুদ্ধে মার্কিনবিরোধী অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ করেছে।
এমনকি রাসূলকে বহিষ্কারের আগেও এমনটা করা হয়েছে। গত মাসে ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সব ধরনের তহবিল বন্ধ করে দেন।
তিনি অভিযোগ করেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ফিলিস্তিনের সংগঠন হামাস ও ইরানের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে এবং শ্বেতাঙ্গবিরোধী নীতি গ্রহণ করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধকে গণহত্যা কনভেনশনের লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
বর্তমানে দশটিরও বেশি দেশ এই মামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগ দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত এসময় আরও বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি এটা বলতে যে আমরা মার্কিনবিরোধী নই। আমরা আপনাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের স্বার্থ ত্যাগ করতেও বলছিনা।’
সাবেক রাষ্ট্রদূতকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণার পর এটিই ছিল তাঁর প্রথম কোনো বক্তব্য। এর আগে মার্কিন প্রশাসন তাঁর কূটনৈতিক অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা বাতিল করে শুক্রবারের মধ্যে দেশ ছাড়তে বলে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে রাসূলকে ‘বর্ণবিদ্বেষী রাজনীতিবিদ’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্পকে ঘৃণা করেন বলেও মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে না।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা