মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) প্রধান জেরোম পাওয়েলকে সম্ভবত সরিয়ে দিতে চান সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাওৱেলের জায়গায় আসতে পারেন কেভিন ওয়ার্শ নামের একজন, যিনি অতীতে ফেডারেল রিজার্ভের গভর্ণর ছিলেন। ফেডারেল রিজার্ভের শীর্ষ পদে পরিবর্তনের এই সম্ভবনা নিয়ে এখন সরগরম আন্তর্জাতিক অর্থনীতি।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের প্রধানের পদ থেকে জেরোম পাওয়েলকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের অসন্তোষের কথা বিভিন্ন সময়ে শোনা গেছে। তিনি প্রকাশ্যেই বলেছেন, পাওয়েলকে দ্রুত সরিয়ে দেওয়া উচিত। যদিও ফেডারেল রিজার্ভের প্রধানকে সরানোর ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের আছে কিনা, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে ট্রাম্প তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় থাকতে পারেন বলে জানা যায়।
যদি পাওয়েলকে সরানো হয়, সেক্ষেত্রে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন কেভিন ওয়ার্শ। তিনি এর আগে ফেডারেল রিজার্ভের গভর্ণর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি তাঁর অর্থমন্ত্রী হওয়ারও একজন সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন। এমনকি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেও ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান হওয়ার জন্য তাঁর নাম শোনা গিয়েছিল।
কেভিন ওয়ার্শ বর্তমানে ৫১ বছর বয়সী। তিনি হার্ভার্ড ল স্কুল থেকে ১৯৯৫ সালে পাশ করেন। তিনি ফেডারেল রিজার্ভ বোর্ডে ২০০৬ সালে যোগ দেন এবং ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেই সময় তিনি ওয়াল স্ট্রিটের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন। তবে, ২০০৮ সালে লেহম্যান ব্রাদার্সকে দেউলিয়া হতে দেওয়ার ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ২০১১ সালে তিনি ফেডারেল রিজার্ভ থেকে পদত্যাগ করেন।
ওয়ার্শ বর্তমানে একটি রক্ষণশীল থিংক ট্যাংক, হুভার ইনস্টিটিউশনে অর্থনীতি বিষয়ক ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়া, তিনি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা স্কুলে ভিজিটিং স্কলার হিসেবেও কাজ করছেন। তাঁর স্ত্রী জেন লডার, যিনি কসমেটিকস ব্যবসায়ী এস্তee লডারের নাতনী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের শীর্ষ পদে এই পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এর কিছু ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। কারণ, ফেডারেল রিজার্ভের নেওয়া বিভিন্ন নীতি, যেমন সুদের হার বৃদ্ধি বা কমানো, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় বাড়াতে পারে, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও উস্কে দিতে পারে। আবার, মার্কিন নীতিমালায় পরিবর্তনের কারণে বিদেশি বিনিয়োগও কমতে পারে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
অতএব, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান পরিবর্তনের বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই পরিবর্তনের ফলে দেশের অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়বে, সেদিকে আমাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন