চরম হুঁশিয়ারি! সরকারি কোষাগারকে নিজের সম্পত্তি ভাবছেন ট্রাম্প?

যুক্তরাষ্ট্রের সরকার অচলাবস্থা: অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের বিতর্কিত পদক্ষেপ

যুক্তরাষ্ট্রে সরকার পরিচালনায় অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি এখন বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের কার্যক্রম সচল রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন, যা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। তিনি কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন খাতে অর্থ সরানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই পরিস্থিতিতে কীভাবে কাজ করছেন ট্রাম্প, তা নিয়েই আমাদের আজকের প্রতিবেদন।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকার যখন অচলাবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। এর অংশ হিসেবে, পেন্টাগনের গবেষণা খাতে বরাদ্দ করা অর্থ এখন সৈন্যদের বেতন দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া, কোস্ট গার্ডের বেতন দেওয়ার জন্য ট্যাক্স ও ব্যয়ের আইন থেকে অর্থ ধার করা হচ্ছে।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টিন নোহেম জানিয়েছেন, কিভাবে এই অর্থ সরিয়ে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। এমনকী, সরকারের পক্ষ থেকে কর্মীদের বেতন পরিশোধের বিষয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে। যদিও আইন অনুযায়ী, সরকারি কর্মীদের এই সময় বেতন পাওয়ার কথা, কিন্তু সেই আইনকেও কার্যত এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুল্ক রাজস্ব অন্য খাতে ব্যবহারেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনে করেন, সরকারের অর্থ তাঁর ইচ্ছানুযায়ী ব্যবহার করার অধিকার তাঁর রয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সৈন্যদের বেতন দেওয়ার জন্য তিনি এক ধনী ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন, যিনি এই ঘাটতি পূরণে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প জানিয়েছেন, পেন্টাগনে অব্যবহৃত অর্থ খুঁজে পাওয়ায় তাঁর এই সাহায্যের প্রয়োজন হবে না।

তবে সৈন্যদের বেতন দেওয়া নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের তেমন কোনো আপত্তি নেই। যদিও কংগ্রেসের অন্য কোনো খাতে বরাদ্দ করা অর্থ এভাবে সরিয়ে নেওয়াটা আইনসম্মত কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এদিকে, অচলাবস্থার কারণে ফেডারেল কর্মীদের ছাঁটাই নিয়েও বিতর্ক চলছে। মেরিল্যান্ডের সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন এই ছাঁটাইকে কর্মীদের মধ্যে “আতঙ্ক” তৈরির চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভেন্স জানিয়েছেন, খাদ্য সহায়তা প্রোগ্রাম (WIC)-সহ অন্যান্য প্রোগ্রাম চালু রাখার জন্য এই ছাঁটাই জরুরি ছিল।

আইনপ্রণেতা জেমি রaskin বলেছেন, অর্থ ব্যয়ের নিয়মকে এভাবে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তিনি আরও বলেন, “তাঁদের নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে অর্থ সরিয়ে নেওয়া উচিত নয়।

হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে। তাদের কৌশল হলো, সৈন্যদের বেতন দেওয়া, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সহায়তা করা এবং কর্মীদের ছাঁটাই চালিয়ে যাওয়া।

ট্রাম্প মনে করেন, ফেডারেল সরকারের অর্থের ওপর তাঁর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টকে দেওয়া একটি সম্ভাব্য ২ হাজার কোটি ডলারের সহায়তার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি এই মন্তব্য করেন। ট্রাম্প মনে করেন, এই সহায়তা আর্জেন্টিনার আসন্ন নির্বাচনে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের জন্য সহায়ক হবে।

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট প্রার্থী জোরান মামদানি জয়ী হলে, শহরটির জন্য ফেডারেল ফান্ড বন্ধ করারও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “আমি নিউইয়র্কে বেশি অর্থ পাঠাবো না। কারণ, এই অর্থ আসে হোয়াইট হাউজের মাধ্যমে। আমি কমিউনিস্টদের কোনো সাহায্য করতে রাজি নই।

ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে, তিনি মনে করেন, ফেডারেল সরকারের অর্থের ওপর তাঁর একচ্ছত্র অধিকার রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *