বদলে গেল দৃশ্যপট! লাইব্রেরিয়ানকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের গ্রন্থাগারিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কার্লা হেডেনকে। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে তাকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

দেশটির জাতীয় গ্রন্থাগার কংগ্রেসের মুখপাত্র সিএনএনকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

কার্লা হেডেনকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট না হলেও, ডেমোক্র্যাট দলের একাধিক কংগ্রেস সদস্য এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

তারা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বই নিষিদ্ধ করা এবং ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগ তুলেছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার নিম্নকক্ষ হাউজের সংখ্যালঘু নেতা হাকিম জেফ্রিস এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, এটি ট্রাম্পের ‘বই নিষিদ্ধ করা, আমেরিকার ইতিহাসকে ধামাচাপা দেওয়া এবং সময়কে পিছিয়ে দেওয়ার ধারাবাহিক চেষ্টার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত’।

সাধারণভাবে, লাইব্রেরি অব কংগ্রেস (Library of Congress) হলো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গ্রন্থাগার।

এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে গ্রন্থাগারিকের পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এর কাজ হলো দেশের জ্ঞান ও তথ্যের ভাণ্ডারকে সংরক্ষণ করা এবং তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কার্লা হেডেন এই পদে যোগদান করেন।

তিনি ছিলেন এই পদে আসীন প্রথম নারী এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি।

নিয়ম অনুযায়ী, তার দশ বছরের মেয়াদের এখনো দেড় বছর বাকি ছিল।

দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি লাইব্রেরির বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সবার জন্য সহজলভ্য করার ওপর জোর দেন।

বিশেষ করে যারা সরাসরি গ্রন্থাগারে আসতে পারেন না, তাদের কাছে লাইব্রেরির বিষয়বস্তু পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার।

ডেমোক্র্যাট সিনেটর মার্টিন হেইনরিখ কার্লা হেডেনের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছেন, তিনি ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের কাছেও লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিয়েছেন এবং অনলাইনে সবার জন্য এটি সহজলভ্য করেছেন’।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বই নিষিদ্ধ করতে চান এবং আমেরিকানদের কি পড়তে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশ দিতে চান, তখন ড. হেডেন তার কর্মজীবন উৎসর্গ করেছেন সবার জন্য পাঠ এবং জ্ঞানের সুযোগ তৈরি করতে’।

এই ঘটনার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

ডেমোক্র্যাটরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে এমন একটি পদক্ষেপ নিয়েছে যা জ্ঞানচর্চা এবং তথ্যপ্রাপ্তির স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।

তারা একে গণতন্ত্রের জন্য একটি অশনি সংকেত হিসেবে দেখছেন।

এই বিতর্কের প্রেক্ষাপটে, লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *