আলোচনা-সমালোচনার ঝড়: ট্রাম্পের আমলে প্রথম সংশোধনী মামলার রায়!

যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিভিন্ন সময়ে বাক-স্বাধীনতার প্রশ্নে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে দেশটির আদালতগুলোতে একের পর এক রায় এসেছে। এসব রায়ে বিচারকরা ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেছেন এবং তাদের সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী, যা বাক-স্বাধীনতা নিশ্চিত করে, তার পরিপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

সম্প্রতি বিভিন্ন মামলার শুনানিতে এমন চিত্রই দেখা গেছে, যা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সহ বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত হয়েছে।

সংবিধানের এই গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের অভিযোগে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আসা উল্লেখযোগ্য রায়গুলোর মধ্যে রয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য বরাদ্দকৃত ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ফেডারেল তহবিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত। বিচারকরা এই পদক্ষেপকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

তাদের মতে, এর মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকারের একটি নির্দিষ্ট আদর্শ চাপিয়ে দেওয়া, যা বাক-স্বাধীনতার পরিপন্থী।

শুধু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অভিবাসন সংক্রান্ত কিছু মামলাতেও ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন আদালত। রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অভিবাসন প্রত্যাশীদের আটক রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আদালত তাদের মুক্তির নির্দেশ দেন।

এছাড়াও, সংবাদমাধ্যম ‘এসোসিয়েটেড প্রেস’-এর (এপি) উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাদের কার্যক্রম সীমিত করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও রায় আসে। বিচারকরা মনে করেন, সরকার যদি কিছু সাংবাদিককে তাদের কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয়, তাহলে তাদের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অন্যদের প্রতি একই আচরণ করতে বাধ্য।

আদালতের এমন সব রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতা প্রয়োগের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা তৈরি করেছে। এমনকি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকরাও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন, যা বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা এবং আইনের শাসনের প্রতি তাদের অঙ্গীকারের প্রমাণ।

তবে, কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য হয়তো আইনি লড়াই জেতা নয়, বরং ভিন্নমতাবলম্বীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করা। তারা মনে করেন, আদালতগুলোতে পরাজয় সত্ত্বেও, বাক-স্বাধীনতাকে সীমিত করার ক্ষেত্রে প্রশাসন সম্ভবত সফল হচ্ছে।

এই বিষয়গুলো থেকে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ কিভাবে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে। বিভিন্ন মামলার রায়গুলো বাক-স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের অধিকারের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *