মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার জন্য হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। আগামী জুনে কানাডায় জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্পের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার জন্য এই বৈঠকটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে বাণিজ্য, নিরাপত্তা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
হোয়াইট হাউসে আসন্ন এই বৈঠকের পূর্বে, কানাডার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা একটি ফলপ্রসূ আলোচনার প্রত্যাশা করছে, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে। তবে, তারা আলোচনার বিষয়সূচি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে না।
কারণ, তারা মনে করে, আলোচনার মূল বিষয়গুলো উভয় পক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি, জি-৭ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপটি ট্রাম্পের জন্য কিছুটা উদ্বেগের কারণ হতে পারে, কারণ অতীতে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের কিছু বিষয়ে মতবিরোধ ছিল।
যদিও, উভয় নেতা এর আগে ইতালির রোমে একটি বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন এবং সেখানে তাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বাণিজ্য ক্ষেত্রে, দেশ দুটি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কিছুটা অবনতি হয়েছে। কানাডার প্রধান রপ্তানি পণ্য, যেমন – ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং গাড়ির যন্ত্রাংশের উপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
অতীতে জি-৭ সম্মেলনে ট্রাম্পের অংশগ্রহণ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক দেখা গেছে। ২০১৮ সালে কানাডায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি সম্মেলনের যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে রাজি হননি এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সমালোচনা করেছিলেন।
এছাড়া, রাশিয়াকে পুনরায় এই গোষ্ঠীর সদস্য করার বিষয়েও ট্রাম্পের আগ্রহ ছিল, যা অন্যান্য সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি করে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্প সম্ভবত আসন্ন জি-৭ সম্মেলনে যোগ দেবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। তবে, তার দল সম্ভাব্য অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এই মুহূর্তে ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সফরের চেয়ে দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণে বেশি আগ্রহী।
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী। তিনি মনে করেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আলোচনা এবং সমঝোতার মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
অন্যদিকে, ট্রাম্পও নতুন বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী এবং শুল্কের বাইরে অর্থনৈতিক সাফল্যের দিকে মনোযোগ দিতে চাইছেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসকে কানাডা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপটি ট্রাম্পের আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার এই আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা সম্পর্কে ধারণা দেয়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন।