আতঙ্ক! হ্যাবিয়াস কর্পাস বাতিলের আলোচনায় ট্রাম্প, কী হবে?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে, সম্ভবত একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক অধিকার স্থগিত করার চিন্তা করা হয়েছিল। এই অধিকারটি হলো ‘হ্যাবিয়াস কর্পাস’। এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া, যা কোনো ব্যক্তিকে যদি বেআইনিভাবে আটক করা হয়, তাহলে তাকে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ দেয়।

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলি দ্রুত সমাধান করতে চেয়েছিল। সেই কারণে তারা এই হ্যাবিয়াস কর্পাস স্থগিত করার কথা বিবেচনা করছিল। এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক কাঠামোর পরিপন্থী এবং এর ফলে ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে।

হ্যাবিয়াস কর্পাস আসলে কী? সহজ ভাষায়, এটি হলো কোনো ব্যক্তিকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করার অধিকার। যদি কোনো ব্যক্তি মনে করেন যে, তাকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে, তাহলে তিনি আদালতের কাছে আবেদন করতে পারেন। আদালত তখন সরকারের কাছে জানতে চাইবে, কেন ওই ব্যক্তিকে আটক করে রাখা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বলা হয়েছে, হ্যাবিয়াস কর্পাস কেবল বিদ্রোহ বা বহিরাক্রমণের মতো পরিস্থিতিতে স্থগিত করা যেতে পারে। তবে এই ধরনের পদক্ষেপ সাধারণত খুব সীমিত ক্ষেত্রেই নেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন এটি স্থগিত করেছিলেন। এছাড়াও, কু ক্লাক্স ক্ল্যান-এর আক্রমণের শিকার হওয়া কিছু অঞ্চলে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে হ্যাবিয়াস কর্পাস স্থগিত করা হয়েছিল।

আইনজ্ঞদের মতে, হ্যাবিয়াস কর্পাস স্থগিত করা হলে, আটককৃত ব্যক্তির মুক্তি পাওয়ার কোনো পথ থাকবে না। এর ফলে সরকারের হাতে নাগরিকদের আটক রাখার অসীম ক্ষমতা চলে আসবে। বিশেষ করে অভিবাসীদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব আরও গুরুতর হতে পারে। কারণ, তাদের দ্রুত বিতাড়িত করার জন্য এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টও এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তারা অভিবাসন সংক্রান্ত কিছু মামলায় হ্যাবিয়াস কর্পাসের সুযোগ বহাল রেখেছে। তবে, এই ধরনের মামলা পরিচালনা করা বেশ কঠিন এবং অভিবাসীদের জন্য আইনজীবী নিয়োগ করাটাও একটি চ্যালেঞ্জ।

হ্যাবিয়াস কর্পাসের ধারণাটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সরাসরি তুলনা করা কঠিন। তবে, বাংলাদেশের সংবিধানেও নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার কথা বলা হয়েছে এবং কোনো ব্যক্তিকে বেআইনিভাবে আটক করা হলে, তার প্রতিকারের ব্যবস্থা রয়েছে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *