মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির জন্য ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দকৃত বিশাল অঙ্কের তহবিল স্থগিত করা হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নাগরিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
খবর অনুযায়ী, কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি এবং নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির জন্য প্রায় ৭৯০ মিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল আটকে দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, এই পদক্ষেপটি মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের বৃহত্তর একটি কৌশলের অংশ, যার মাধ্যমে তারা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে চাইছে।
জানা গেছে, এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ করে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়কে জরুরি ভিত্তিতে গবেষণা সংক্রান্ত ৭০টির বেশি ‘স্টপ ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়েছে।
এই গবেষণাগুলো আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা, সাইবার নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আই. কোটলিকোফ জানিয়েছেন, তারা ফেডারেল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য জানার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট মাইকেল স্কিল বলেছেন, ফেডারেল সরকার তাদের কোনো আনুষ্ঠানিক নোটিশ দেয়নি।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে গত বছর গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে।
ট্রাম্প প্রশাসন তখন অভিযোগ তুলেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ক্যাম্পাসে ইহুদি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেখানে অ্যান্টি-সেমিটিজম বা ইহুদি বিদ্বেষ বেড়েছে।
এর আগে, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কেও একই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে তাদেরও প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু নীতির পরিবর্তন করে, যা একাডেমিক স্বাধীনতা খর্ব করেছে বলেও অনেকে মনে করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা এবং শিক্ষার পরিবেশের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
একই সঙ্গে, এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা এবং সরকারের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস