ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় হার্ভার্ডের ভবিষ্যৎ সংকটে? শিক্ষার্থীদের চোখে জল!

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের তালিকাভুক্তি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে বিশ্বজুড়ে শিক্ষাঙ্গনে এক গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বের অন্যতম সেরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মান ও সুনাম হুমকির মুখে পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের কারণে হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এর ফলস্বরূপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি, আর্থিক সংস্থান এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষকদের আকৃষ্ট করার ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, এই সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

খবরটি প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই এর প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। বেলজিয়ামের রাজকুমারী এলিজাবেথ, যিনি হার্ভার্ডে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করছেন, তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত তাদের ভাবমূর্তি ও আন্তর্জাতিক সম্মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

যদিও আদালতের হস্তক্ষেপে আপাতত এই সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে, তবে হার্ভার্ডের ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখনো শঙ্কা রয়ে গেছে। কারণ, এই ধরনের পরিস্থিতি ভবিষ্যতে আবারও তৈরি হতে পারে।

হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে চীন ও ভারতের নাগরিকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। জানা গেছে, হার্ভার্ডে প্রায় ৬,৮০০ বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। তাঁদের মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী এই দুটি দেশ থেকে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের কারণে তাঁদের ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবন এবং আমেরিকায় বসবাসের সুযোগ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এই ঘটনার জেরে অনেক শিক্ষার্থী বিকল্প পথ খুঁজছেন। কেউ কেউ অন্য দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগের কথা ভাবছেন, আবার কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন থেকে সরে আসছেন। এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়েছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলছে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো, লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন সিরলিফ এবং জাপানের সম্রাট পরিবারের সদস্যরাও একসময় হার্ভার্ডে পড়াশোনা করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হার্ভার্ডের মতো স্বনামধন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর এমন সিদ্ধান্তের প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে। এই ঘটনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে ভুল বার্তা যেতে পারে, যা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে আমেরিকার আকর্ষণ কমিয়ে দিতে পারে। অনেক শিক্ষার্থীর মনে এখন এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের ভবিষ্যৎ কতটা নিরাপদ হবে?

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *