ডোনাল্ড ট্রাম্প হত্যাচেষ্টা: অভিযুক্তের আত্মপক্ষ সমর্থন, চাঞ্চল্যকর শুনানি!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। অভিযুক্ত ৫৯ বছর বয়সী রায়ান রুথ, যিনি নিজেকেই এই মামলার আইনজীবী হিসেবে উপস্থাপন করছেন।

আগামী সোমবার ফ্লোরিডার ফোর্ট পিয়ার্স শহরে ফেডারেল আদালতে এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

অভিযোগ উঠেছে, গত বছর সেপ্টেম্বরে রুথ ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচের একটি গলফ ক্লাবের কাছে, যেখানে ট্রাম্প গলফ খেলছিলেন, সেখানে একটি রাইফেল নিয়ে অবস্থান করেন। রুথের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হলো, একজন প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের জীবননাশের চেষ্টা করা।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ফেডারেল কর্মকর্তাকে আক্রমণ, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ নিজের কাছে রাখা এবং অস্ত্রের সিরিয়াল নম্বর পরিবর্তন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আদালতের নথিপত্র অনুযায়ী, রুথ ওই সময় নিজেকে একটি “স্নাইপার নেস্ট” তৈরি করেছিলেন এবং ট্রাম্পের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করেছিলেন। আইনজীবীরা বলছেন, রুথের বিরুদ্ধে তাদের কাছে প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য, অস্ত্র বিক্রেতাদের বক্তব্য এবং রুথের লেখা একটি স্বীকারোক্তি রয়েছে।

সেই চিঠিতে রুথ ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টার কথা স্বীকার করেছেন।

বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অ্যালাইন ক্যানন, যিনি এর আগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে থাকা গোপন নথি মামলার শুনানিতেও ছিলেন। রুথ আদালতে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইছেন এবং তার শান্ত স্বভাবের প্রমাণ হিসেবে পুরনো সহকর্মী ও বন্ধুদের সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত করেছেন।

তবে, বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগে রুথ আদালতের কাছে একটি ফোন, একটি “fancy typewriter” এবং কিছু বিনোদনের সামগ্রীর আবেদন করেছিলেন। এমনকি তিনি “কিছু নারী স্ট্রিপার”-এরও আবদার করেছিলেন।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে রুথের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। রুথ তার আইনজীবীর পরিবর্তে নিজে মামলা পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা অনেক সময় অভিযুক্ত ব্যক্তির জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

রুথের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে আইনজীবীরা তার ব্যবহৃত রাইফেল, ঘটনাস্থলের ছবি এবং একটি চিঠি জমা দিয়েছেন। ওই চিঠিতে রুথ ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টার কথা উল্লেখ করেছেন এবং এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

তদন্তকারীরা বলছেন, রুথের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া রাইফেলটি অবৈধভাবে বিক্রি করা হয়েছিল।

তবে, রুথের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আদালত রুথের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন।

আদালত বলেছেন, রুথ ইতিমধ্যে জানিয়েছেন যে তিনি তার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো প্রতিরক্ষামূলক যুক্তি দেখাবেন না।

বিশেষজ্ঞরা রুথের মধ্যে “নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার” এবং “মিশ্র ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য” খুঁজে পেয়েছেন বলে জানা গেছে। এই মামলার রায় কি হয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *