মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (USA) নাগরিকদের স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য সহজলভ্য করার লক্ষ্যে একটি নতুন উদ্যোগ শুরু করতে যাচ্ছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো, রোগীদের তাদের মেডিকেল রেকর্ড সহজে পাওয়ার ব্যবস্থা করা।
জানা গেছে, প্রায় ৬০টি স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক বৃহৎ কোম্পানি এই উদ্যোগে সহায়তা করতে রাজি হয়েছে। এদের মধ্যে মাইক্রোসফট ও ওরাকলের মতো টেক জায়ান্টও রয়েছে।
হোয়াইট হাউজে বুধবার এক ভাষণে ট্রাম্প এই প্রকল্পের ঘোষণা দেবেন বলে কথা রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায়, কোম্পানিগুলো রোগীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক ডেটা বা তথ্য আদান-প্রদানের জন্য নতুন কিছু পদ্ধতি তৈরি করতে একজোট হবে।
বর্তমানে বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় রোগীদের তথ্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে বেশ বেগ পেতে হয়। এই নতুন উদ্যোগ সেই সমস্যা সমাধানে সাহায্য করবে।
তবে, এই বিশাল কর্মযজ্ঞ কত দ্রুত সম্পন্ন করা যাবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এছাড়া, কোম্পানিগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করবে, সে বিষয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
এই প্রকল্পের কারণে অনেক রোগীর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। কারণ, তথ্য বেশি মানুষের কাছে গেলে তা সুরক্ষিত রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যখাতের নিয়ম-কানুন তৈরি ও তদারকি করে থাকে সেন্টারস ফর মেডিকেয়ার অ্যান্ড মেডিকেইড সার্ভিসেস (সিএমএস)। তারা জানিয়েছে, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো একটি উন্নত, সুরক্ষিত এবং ব্যক্তিগতকৃত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা তৈরি করা।
এর মাধ্যমে রোগীদের ভালো ফল নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের চাপ কমানো এবং বেসরকারি খাতের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে কাজে লাগানো যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীতেও রোগীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক রেকর্ডের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে, প্রযুক্তিগত জটিলতা এবং তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়গুলো এক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই প্রকল্পের মূল ধারণা হলো, সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ না করে, বেসরকারি খাতকে এই সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করা। খাদ্য কোম্পানিগুলোকে তাদের পণ্য থেকে কৃত্রিম রং অপসারণ করতে উৎসাহিত করা এবং বীমা কোম্পানিগুলোকে রোগীদের চিকিৎসা প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য পদক্ষেপ নিতে বলা – এমন কিছু পদক্ষেপের মতোই এটি।
তবে, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে সমন্বয় করা সহজ হবে না। কারণ, তাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে। এছাড়া, তথ্য শেয়ার করার ফলে গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রেও জটিলতা তৈরি হতে পারে।
কারণ, এমনও হতে পারে যে, কোনো দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পন্ন কোম্পানির হাতে রোগীর তথ্য গেলে, তারা সেই তথ্য বিক্রি করে দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা বাংলাদেশের থেকে ভিন্ন। সেখানে মূলত বেসরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করা হয়। এই ধরনের একটি উদ্যোগে রোগীদের তাদের মেডিকেল রেকর্ডের ওপর আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ আসবে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার এই ধারণাটি একটি বৈশ্বিক ধারণা। ভবিষ্যতে হয়তো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও এমন কিছু পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন