আতঙ্ক! এইচআইভি গবেষণায় অর্থ কাটছাঁট: মৃত্যুঝুঁকিতে?

যুক্তরাষ্ট্র সরকার এইচআইভি গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা এই মরণব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি, দেশটির স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগ (Department of Health and Human Services) এইচআইভি সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণার জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল বাতিল করেছে।

এর ফলে, গবেষণা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপের কারণে এইচআইভি/এইডস নির্মূলের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রগতি পিছিয়ে যেতে পারে। এমনকী, আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মৃত্যুহারও বাড়তে পারে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই তহবিল হ্রাসের ফলে এইচআইভি প্রতিরোধের চলমান প্রচেষ্টা দুর্বল হয়ে পড়বে।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথ (National Institutes of Health) জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের নির্দেশে ‘অনুৎপাদনশীল ব্যয়’ (wasteful spending) হ্রাস করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাদের মতে, যেসব গবেষণা আমেরিকান জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী, সেগুলোর ওপর থেকে অর্থ সহায়তা তুলে নেওয়া হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৮১ সাল থেকে এ পর্যন্ত এইচআইভি সংক্রমণ ৭ লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছে। বর্তমানে, দেশটিতে প্রায় ১২ লক্ষাধিক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত।

উদ্বেগের বিষয় হলো, আক্রান্তদের মধ্যে ১৩ শতাংশের বেশি মানুষ জানেন না যে তারা এইচআইভি পজিটিভ। এই পরিস্থিতি ভাইরাসের বিস্তার রোধে একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই তহবিল হ্রাস মূলত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর বেশি প্রভাব ফেলবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সমকামী পুরুষ, রূপান্তরকামী ব্যক্তি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।

এই গোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি। গবেষণায় অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, তাদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইউনিসেফ সতর্ক করে বলেছে, এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে বিশ্বে এইডস-এ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এইচআইভি প্রতিরোধের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক গবেষক তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

তাদের মতে, এই পরিস্থিতিতে গবেষণার গুণগত মান বজায় রাখা কঠিন হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইচআইভি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থানে পৌঁছেছে, এই ধরনের তহবিল হ্রাস সেই অগ্রযাত্রাকে দুর্বল করে দেবে। তারা মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত জীবনহানির কারণ হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *