যুদ্ধ বন্ধ করতে ট্রাম্পের ‘মাস্টারপ্ল্যান’, পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে জরুরি বৈঠক!

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলতে যাচ্ছেন।

সোমবার এই ফোনালাপগুলো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প মনে করেন, পুতিনের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক এই সংকট সমাধানে সহায়তা করতে পারে।

ফেব্রুয়ারি ২০২২-এ রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে এই যুদ্ধ চলছে।

এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি যদি যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন, তাহলে তা হবে তার একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পরিচিতির প্রমাণ। যদিও অনেকের মধ্যে এমন আশঙ্কা রয়েছে যে ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের ভালো সম্পর্কের কারণে ইউক্রেন কোনো সমঝোতায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ব্রিজেট ব্রিঙ্ক গত মাসে ইউক্রেন থেকে পদত্যাগ করেছেন।

তিনি জানান, বাইডেন প্রশাসনের শুরু থেকেই ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে।

ব্রিঙ্কের মতে, তিনি যখন দেখলেন, হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প এবং তার দল জেলেনস্কিকে যথেষ্ট সম্মান দেখাচ্ছেন না, তখনই তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।

ব্রিঙ্ক মনে করেন, “যেকোনো মূল্যে শান্তি” আসলে শান্তি নয়, বরং তা “তোষণ”। তিনি ইতিহাসের উদাহরণ টেনে বলেন, তোষণ যুদ্ধের দিকেই নিয়ে যায়।

ট্রাম্প মনে করেন, তিনি যদি আলোচনার মাধ্যমে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন, তাহলে তা হবে তার জন্য একটি বড় সাফল্য।

তিনি এর আগে বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় থাকলে দ্রুত এই সংঘাতের সমাধান করতে পারতেন। এই আলোচনার মাধ্যমে তিনি বাণিজ্য এবং নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয়গুলো ব্যবহার করে পুতিনকে একটি সমাধানে আসার জন্য রাজি করানোর চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, ইউক্রেন একটি ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে, তবে তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া আলোচনা কোনো ফল আনতে পারেনি।

তবে উভয় দেশই ১০০০ যুদ্ধবন্দীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে রাজি হয়েছে। ইউক্রেনের গোয়েন্দা প্রধান কাইরিলো বুদানোভ জানিয়েছেন, খুব সম্ভবত এই সপ্তাহেই বন্দী বিনিময় হতে পারে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।

ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রবিবার কিয়েভ, ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলে মোট ২৭৩টি ড্রোন ও ডে cover attack করা হয়েছে।

ট্রাম্পের উপদেষ্টারা জানিয়েছেন, সোমবারের ফোনালাপগুলোতে আলোচনার মূল বিষয় হবে যুদ্ধ বন্ধ করা।

এছাড়া বাণিজ্য এবং রাশিয়ার ওপর সম্ভাব্য নতুন নিষেধাজ্ঞা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রবিবার ইতালির রোমে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তুরস্কের আলোচনা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধের জন্য তারা “প্রকৃত কূটনীতি” চালিয়ে যাচ্ছেন।

জার্মান সরকার জানিয়েছে, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মার্জ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এবং ইতালির নেতাদের সঙ্গেও রবিবার ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্পের আলোচনা হয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, সোমবার পুতিনের উচিত ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়া, যা ইউক্রেন ও ইউরোপ সমর্থন করে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *