মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন আদালতে আটকের সংখ্যা হঠাৎ করেই বেড়ে যাওয়ায় অভিবাসী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি, ট্রাম্প প্রশাসনের গণ-গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে, অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্টরা আদালত চত্বরে তাদের কার্যক্রম জোরদার করেছে।
খবর অনুযায়ী, এমনকি যাদের কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই, এমন ব্যক্তিদেরও আটক করা হচ্ছে।
ফ্লোরিডার মায়ামিতে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার বিবরণ পাওয়া গেছে। ২৮ বছর বয়সী কলম্বিয়ান নাগরিক জুয়ান সেরানোকে একটি শুনানির জন্য আদালতে ডাকা হয়েছিল।
তার কোনো ফৌজদারি রেকর্ড ছিল না। শুনানির শুরুতে বিচারক যখন জানান যে তার মামলা খারিজ করা হচ্ছে, তখন তিনি স্বাভাবিকভাবেই খুশি হয়েছিলেন।
কিন্তু আদালত থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কয়েকজন ফেডারেল এজেন্ট তাকে আটক করে। সেরানোর বান্ধবী জানিয়েছেন, তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন।
শুধু সেরানোই নন, নিউইয়র্ক থেকে শুরু করে সিয়াটল পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যের অভিবাসন আদালতগুলোতে একই চিত্র দেখা গেছে।
মার্কিন বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হলেও, আদালত চত্বরে আইসিই এজেন্টদের এমন উপস্থিতি আগে খুব একটা দেখা যেত না।
অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবী উইলফ্রেডো অ্যালেন জানান, “এসব আটকের মূল উদ্দেশ্য হলো দ্রুত ডিটেনশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুত অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো।
আর্টিকেল অনুযায়ী, অভিবাসন আইনজীবীদের সংগঠন ‘আমেরিকান ইমিগ্রেশন লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (AILA) জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরেই আটকের ঘটনা ঘটলেও, মঙ্গলবার এর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
অভিবাসন আদালতের বাইরে সেরানোর ছেলের জন্য অপেক্ষা করছিলেন এক কিউবান ব্যক্তি। ছেলের মামলা খারিজ হওয়ার পর তিনি ভেবেছিলেন, হয়তো তার ছেলে দ্রুতই আইনি সুযোগ পাবে।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, তার সব স্বপ্ন ভেঙে খান খান।
মায়ামির একটি অফিসের অভিবাসন আইনজীবী আন্তোনিও রামোস মনে করেন, সরকারের নতুন কৌশল সেখানকার অভিবাসী সমাজে গভীর প্রভাব ফেলবে।
এর ফলে, ভালো মানুষগুলোও তাদের মামলার শুনানিতে যেতে ভয় পাবে। কারণ, তাদের মধ্যে আটকের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
সেরানোর বান্ধবী জানান, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ভালো জীবন যাপনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তারা কঠোর পরিশ্রম করে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়েছিলেন, যার মাসিক ভাড়া ছিল ১,৪০০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা)।
সেরানোর কোনো ট্র্যাফিকের চালানও ছিল না।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন বিষয়ক এমন নীতিমালার কারণে সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও উদ্বেগ বাড়ছে।
কারণ, অনেক বাংলাদেশিও কাজের সূত্রে অথবা উন্নত জীবনের আশায় সেখানে পাড়ি জমান। তাই এই ধরনের ঘটনার প্রভাব তাদের জীবনযাত্রায়ও পড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)