শিরোনাম: ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি: কিউবান অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে সেখানকার কিউবান অভিবাসীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে, বিশেষ করে ঠান্ডা যুদ্ধের সময় থেকে, কিউবানরা মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থায় বিশেষ সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন পদক্ষেপ তাদের সেই সুবিধাগুলো কেড়ে নিচ্ছে।
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়, সম্প্রতি কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল এমন কয়েকজনকে আটকের পর তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন টমাস হার্নান্দেজ নামে ৭১ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিউবার গোয়েন্দা সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন।
এই ঘটনায় দক্ষিণ ফ্লোরিডার কিউবান-আমেরিকান সম্প্রদায়ের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে সমর্থন করছেন, কারণ তারা কিউবার কমিউনিস্ট সরকারের প্রতি কঠোর মনোভাব পোষণ করেন।
তবে, অনেকে আবার আশঙ্কা করছেন, এর ফলে তারাও হয়তো ভবিষ্যতে ট্রাম্প প্রশাসনের নিগ্রহের শিকার হতে পারেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বিষয়টিকে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবেও দেখছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই নীতির মূল লক্ষ্য হলো অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি আরোপ করা। যদিও এই নীতি অনেক দেশের অভিবাসীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করেছে, কিউবান-আমেরিকানদের জন্য এটি কিছুটা অপ্রত্যাশিত ছিল।
কারণ, তারা রিপাবলিকান পার্টির প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসেছেন।
আরেকটি বিষয় হলো, ট্রাম্প প্রশাসন কিউবা থেকে আসা প্রায় ৩ লক্ষ অভিবাসীর মানবিক প্যারোলের সুবিধা বাতিল করেছে। এর ফলে তাদের মধ্যে অনেকেই বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে, মিয়ামির মতো শহরগুলোতে, যেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কিউবান অভিবাসীর বসবাস, সেখানে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ডেমোক্র্যাটরা বিষয়টিকে তাদের সুবিধা মতো ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন।
তারা রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধে কিউবান-আমেরিকানদের অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রাক্তন কিউবান সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ট্রাম্পের মিত্রদের শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। তবে, বিতাড়নের এই প্রক্রিয়াটি সহজ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
কারণ, কিউবায় নিয়মিত ফ্লাইট পাঠানোর ব্যবস্থা এখনো আগের মতোই রয়েছে।
অন্যদিকে, কিছু কিউবান অভিবাসী, যারা দীর্ঘদিন ধরে কমিউনিস্ট শাসনের বিরোধিতা করে আসছেন, তারা মনে করেন, তাদের দেশ থেকে পালিয়ে আসা লোকজন এখন যুক্তরাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে, অথচ একসময় তারা আমেরিকার সমালোচনা করতেন।
সব মিলিয়ে, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি কিউবান অভিবাসী সমাজে গভীর প্রভাব ফেলেছে। এই নীতির কারণে একদিকে যেমন কিছু মানুষ খুশি, তেমনি অনেকে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।
এটি একটি জটিল পরিস্থিতি, যা সেখানকার রাজনৈতিক এবং সামাজিক জীবনে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন