ট্রাম্পের পক্ষে রায়, ধর্মীয় স্থানেও চলবে অভিবাসন অভিযান!

যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় উপাসনালয়ে অভিবাসন কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে রায় দিয়েছেন একজন ফেডারেল বিচারক। এই রায়ের ফলে সেখানকার ধর্মীয় সংগঠনগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। খবরটি সেখানকার মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত শুক্রবার এই রায় দেন। ডিস্ট্রিক্ট জজ ডাবনি ফ্রিডরিশ সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে এই সিদ্ধান্ত জানান। এর ফলে অভিবাসন কর্মকর্তারা আপাতত ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্মীয় গোষ্ঠী, যারা এই নীতির বিরোধিতা করে আসছিল।

তারা মনে করে, এটি তাদের ধর্মীয় অধিকারের পরিপন্থী। আদালতে দাখিল করা এক মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল যে, নতুন এই নীতি ধর্মীয় স্বাধীনতাকে লঙ্ঘন করে।

ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর দাবি, এই নীতির কারণে উপাসনালয়গুলোতে লোকজনের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। তাদের মতে, অনেক স্থানে আগের তুলনায় অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এখন আর উপাসনায় যোগ দিচ্ছেন না।

তবে বিচারক ফ্রিডরিশ তাঁর রায়ে বলেছেন, ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো তাদের দাবির স্বপক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। তিনি উল্লেখ করেন, উপাসনালয়গুলোতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের কার্যক্রমের সঙ্গে উপাসনাকারীদের অনুপস্থিতির সরাসরি সম্পর্ক আছে, এমনটা প্রমাণ করা যায়নি। তাঁর মতে, অভিবাসন বিরোধী কার্যক্রমের কারণে লোকজন হয়তো তাদের আশেপাশের এলাকা এড়িয়ে চলছে।

আদালতের এই রায়ের ফলে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের আইনজীবী কেলসি কর্করান জানিয়েছেন, তাঁরা এই নীতির প্রভাব নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং প্রথম সংশোধনী ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার আইনের অধীনে পাওয়া অধিকার রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ট্রাম্প প্রশাসন তাদের পুরনো একটি নীতি বাতিল করে, যেখানে অভিবাসন কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ ছিল। নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, ফিল্ড এজেন্টরা ‘বিবেচনা’ এবং ‘সাধারণ জ্ঞান’ ব্যবহার করে এখন থেকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে অভিবাসন সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।

আদালতের এই রায়ের পর অন্যান্য কয়েকটি মামলার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। এর আগে মেরিল্যান্ডের একটি আদালত কিছু ধর্মীয় গোষ্ঠীর জন্য অভিবাসন কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। আবার, কলোরাডোর একটি আদালত অভিবাসন কর্মকর্তাদের স্কুলগুলোতে গ্রেপ্তারি অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অভিবাসন নীতির মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ছে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *