ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি: সুপ্রিম কোর্টে কি ভাঙন?

মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে অভিবাসন বিষয়ক একটি নতুন মামলার শুনানি শুরু হয়েছে, যা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত বহিষ্কার নীতিগুলোর প্রতি বিচারপতিদের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই মামলার শুনানি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন বিষয়ক কঠোর পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে গভীর সন্দেহ প্রকাশ করছে।

মামলার মূল বিষয় হলো, ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ সুদানসহ বিভিন্ন দেশে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছে, যাদের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। অভিযোগ উঠেছে, তাদের ফেরত পাঠানোর আগে পর্যাপ্ত নোটিশ দেওয়া হয়নি এবং তাদের আপিল করার সুযোগও সীমিত ছিল।

বোস্টনের একজন জেলা বিচারক এই বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপকে তার আদালতের আদেশ “অস্বীকারযোগ্যভাবে” লঙ্ঘন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন।

আদালতে শুনানিতে বিচারপতিদের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অনাস্থার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিচারপতি এমি কোনি ব্যারেট, যুক্তরাষ্ট্রের সলিসিটর জেনারেল ডি. জন সউয়ারকে প্রশ্ন করেন, প্রশাসন কোনো আদালতের রায় নাও মানতে পারে এমনটা তারা বলতে চাইছে কিনা।

জবাবে সউয়ার জানান, তারা সাধারণত আদালতের রায়কে সম্মান করেন, তবে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে এটি সব সময় করা হয় না।

বিচারপতি ব্র্রেট কাভানাফও ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির সমালোচনা করেন। তিনি সউয়ারের কাছে জানতে চান, আদালত যদি কোনো আইন বা নীতিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, তাহলে সরকার কি তা কার্যকর করতে পারবে? জবাবে সউয়ার হ্যাঁ সূচক উত্তর দেন।

আদালতের এই মনোভাব ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন বিষয়ক কঠোর পদক্ষেপের কারণে তৈরি হয়েছে। এর আগে, ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের বহিষ্কার সংক্রান্ত একটি মামলায়ও আদালত বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল।

রক্ষণশীল বিচারপতিরা ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে অবস্থান নিলেও, উদারপন্থী বিচারপতিরা এর বিরোধিতা করেন।

আদালতের এই দ্বিধা-বিভক্তির কারণ হলো, ট্রাম্প প্রশাসনের দ্রুত অভিবাসীদের বহিষ্কারের প্রবণতা। এক্ষেত্রে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ উঠেছে।

এমনকি, আদালত যখন অভিবাসীদের সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছিল, তখনও প্রশাসন তা মানতে গড়িমসি করেছে।

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বিষয়ক একটি মামলার শুনানিতেও আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির সমালোচনা করেছে। এই মামলায়, ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অভিবাসীদের সন্তানদের নাগরিকত্ব বাতিল করতে চেয়েছিল।

আদালত এই ধরনের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে।

মোটকথা, সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন বিষয়ক নীতিগুলো ক্রমশ প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে। বিচারকরা মনে করছেন, সরকার আদালতের রায়কে সম্মান জানাচ্ছে না এবং অভিবাসীদের অধিকারকে খর্ব করছে।

এই মামলার রায় ভবিষ্যতে অভিবাসন বিষয়ক নীতিগুলোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *