ট্রাম্পের বিস্ফোরক ঘোষণা: ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা!

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে সরাসরি আলোচনা শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্ভূত সংকট নিরসনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্প একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আলোচনা ব্যর্থ হলে তেহরানকে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।

হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক বৈঠকের পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, আসন্ন সপ্তাহান্তে এই আলোচনা শুরু হতে পারে।

যদিও তাঁর ইঙ্গিত, আলোচনা হয়তো এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ট্রাম্প জানান, এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো—ইরান যাতে পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা।

আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা গেলে, তা সবার জন্যই ভালো হবে। অন্যথায়, এর ফল ভালো হবে না বলেই তিনি মনে করেন।

আলোচনা কোথায় হবে বা কোন কর্মকর্তারা এতে অংশ নেবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি ট্রাম্প।

তবে, আলোচনা ব্যর্থ হলে ইরানের জন্য ‘বিপজ্জনক পরিণতি’ অপেক্ষা করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, আলোচনা সফল না হলে ইরানের জন্য খারাপ দিন আসবে।’

উল্লেখ্য, বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়ে ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত।

এই চুক্তির মাধ্যমে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল, যার বিনিময়ে দেশটি তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সীমিত করতে রাজি হয়েছিল।

তবে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন এবং ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের কারণে ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি আরও জোরদার করেছে এবং তারা বোমা তৈরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

যদিও ইরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

তারা কখনোই পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করছে না।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে কোনো সরাসরি কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।

তেহরানে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস দখল এবং ৫৩ জন কূটনীতিককে ৪৪৪ দিন জিম্মি করে রাখার ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে এই সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যেকার এই আলোচনা বিশ্ব শান্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়লে তার প্রভাব শুধু ওই অঞ্চলের দেশগুলোতে নয়, বরং বিশ্বজুড়ে অনুভূত হয়।

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্যও আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা খুবই জরুরি।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *