ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান আলোচনা দ্রুত সমাধানের জন্য তেহরানকে তাগিদ দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তার প্রশাসন ইরানের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে এবং দ্রুত এর জবাব পেতে আগ্রহী তারা।
আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে, তবে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ‘কিছু খারাপ’ ঘটতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ওমানের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। এই আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করা এবং এর বিনিময়ে তেহরানের উপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি রুখতে তারা বদ্ধপরিকর।
তবে ইরানের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব পাওয়ার কথা সরাসরি অস্বীকার করা হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো প্রস্তাব পাননি। তারা বরং ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে আসা পরস্পরবিরোধী বিবৃতির সমালোচনা করেছেন।
তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য হয়তো আলোচনার কৌশল, অথবা তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার প্রমাণ।
এদিকে, ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি জানিয়েছেন, তেহরান আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তিনি জানান, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারা তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বৈঠক করেছেন।
সেখানে পরমাণু আলোচনা এবং নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনে, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির সঙ্গে জড়িত দেশগুলোর সঙ্গেও তারা আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে একটি পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা থেকে ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন একতরফাভাবে বেরিয়ে আসে এবং ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ধীরে ধীরে চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে শুরু করে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি উদ্বেগের কারণ। এই পরিস্থিতিতে, উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা