যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনা আয়োজনে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যোগ দিতে পারেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আলোচনার প্রস্তাবের পরেই ট্রাম্প এই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সোমবার ট্রাম্প জানান, তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বৃহস্পতিবারের আলোচনায় যোগ দিতে পারেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে মস্কো থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
জেলেনস্কি বলেছেন, “আমরা, ইউক্রেনের সকলে, তুরস্কের বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আমাদের সঙ্গে পেলে খুশি হব। এটি সঠিক ধারণা। এর মাধ্যমে অনেক কিছুই পরিবর্তন করা যেতে পারে।”
পুতিনের সরাসরি আলোচনার প্রস্তাবের পর ট্রাম্প প্রকাশ্যে জেলেনস্কিকে এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
ইউক্রেন ও পশ্চিমা মিত্রদের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পরেই পুতিন এই প্রস্তাব দেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তিনি বৈঠকে যোগ দিতে প্রস্তুত, তবে পুতিনেরও সশরীরে উপস্থিত থাকা উচিত।
মঙ্গলবার জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক আবারও নিশ্চিত করেছেন যে, জেলেনস্কি শুধুমাত্র পুতিনের সঙ্গেই সাক্ষাৎ করবেন, রুশ প্রতিনিধি দলের অন্য কারও সঙ্গে নয়।
ক্রেমলিন এখনো জানায়নি যে পুতিন নিজে তুরস্কে যাবেন কিনা। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা দীর্ঘমেয়াদি শান্তির জন্য একটি উপযুক্ত উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।”
যদি বৃহস্পতিবার জেলেনস্কি ও পুতিনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে এটি হবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের পর তাদের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ।
এদিকে, ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা মঙ্গলবার রাতে রাশিয়ার ছোড়া ১০টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটিই রাশিয়ার ড্রোন হামলার সর্বনিম্ন সংখ্যা।
ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফের মতে, সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার ভোর ৪টা) যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও, ভোর থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে ফ্রন্ট লাইনে ১৩৩টি সংঘর্ষ হয়েছে।
জেলেনস্কির উদ্ধৃতি দিয়ে জানা যায়, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত দোনেৎস্ক অঞ্চল এবং রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুর্স্ক অঞ্চলে এখনো সবচেয়ে বেশি লড়াই চলছে।
কিয়েভ বাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে আক্রমণের ৯ মাস পরেও এই পরিস্থিতি বিদ্যমান।
অন্যদিকে, রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তাদের বেলগোরোদ অঞ্চলে হামলার অভিযোগ এনেছে।
গভর্নর ভিয়াচেস্লাভ গ্লাদকভ মঙ্গলবার জানান, গত একদিনে ইউক্রেনীয় বাহিনী তাদের অঞ্চলে ৬৫টি ড্রোন ও ১০০টির বেশি গোলাবারুদ ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা