ডিসি-তে ট্রাম্পের আগ্রাসন: কেনেডি সেন্টারে কি হচ্ছে?

ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে ফিরে এসেছেন, ওয়াশিংটন ডিসির সংস্কৃতি অঙ্গনে নিজের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। এর অংশ হিসেবে তিনি কেনেডি সেন্টার-এর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।

বুধবার তিনি কেনেডি সেন্টারে যান এবং সেখানে তার নতুন কিছু সিদ্ধান্তের কথা জানানোর কথা রয়েছে। ট্রাম্প এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে তার অনুগতদের বসিয়েছেন এবং কেন্দ্রের বিভিন্ন কার্যক্রমে পরিবর্তন আনছেন।

ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্প কেনেডি সেন্টারের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই তিনি এই প্রতিষ্ঠানের ওপর তার প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।

রিপাবলিকানরা এরই মধ্যে কংগ্রেসে প্রস্তাব করেছেন যে কেনেডি সেন্টারের কিছু অংশের নামকরণ যেন ট্রাম্পের নামে করা হয়। এমনকি, তারা পুরো কেন্দ্রটির নাম পরিবর্তন করে ‘ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস’ রাখারও প্রস্তাব করেছেন।

কেনেডি সেন্টার যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। এখানে বিভিন্ন কনসার্ট, নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

ট্রাম্প এই কেন্দ্রের পরিচালনা পর্ষদে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও উপদেষ্টাদের নিয়োগ দিয়েছেন। এর ফলে কেন্দ্রের কার্যক্রমেও পরিবর্তন আসছে।

উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি এখানে খ্রিস্টান ব্রডকাস্টিং নেটওয়ার্কের তৈরি একটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিশ্বাসের পুনর্জাগরণ নিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে ডেমোক্র্যাট এবং কেনেডি সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত শিল্পী ও কলাকুশলীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেকে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন এবং পদত্যাগও করেছেন।

যদিও রিপাবলিকানদের মধ্যে ট্রাম্পের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। জুলাই মাসে রিপাবলিকান সদস্যরা একটি বিলের মাধ্যমে প্রস্তাব করেন, কেনেডি সেন্টারের অপেরা হাউসের নামকরণ যেন মেলানিয়া ট্রাম্পের নামে করা হয়।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপগুলো ওয়াশিংটন ডিসিতে ফেডারেল প্রভাব বিস্তারের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। এর মাধ্যমে তিনি শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছেন।

তার মতে, শহরের সংস্কৃতিতে ‘উইক’ (woke) উপাদানগুলো বেশি, যা তার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপ আমেরিকার সংস্কৃতি অঙ্গনে রাজনৈতিক বিভাজন আরও বাড়িয়ে তুলছে। কেনেডি সেন্টারের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর সরাসরি রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা নজিরবিহীন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *