শিরোনাম: ট্রাম্পের সম্ভাব্য এশিয়া সফরে কিম জং-উনের সঙ্গে বৈঠকের আলোচনা, সংশয় এখনো
ওয়াশিংটন ডিসি থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন এশিয়া সফরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে, এমন একটি বৈঠক বাস্তবে অনুষ্ঠিত হবে কিনা, তা নিয়ে এখনো অনেক সন্দেহ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে এমনটাই জানা গেছে।
সূত্রের খবর, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে এই বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। যদিও এখনো পর্যন্ত বৈঠকের আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, এক্ষেত্রে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সরাসরি কোনো যোগাযোগের অভাব রয়েছে, যা ট্রাম্পের আগের মেয়াদে দেখা গিয়েছিল। জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ দেখা গেলেও, উত্তর কোরিয়া সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।
হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, আসন্ন এশিয়া সফরের জন্য চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে একটি বৈঠকের আয়োজনে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
তবে, ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী এবং কর্মকর্তাদের তরফ থেকেও এশিয়া সফরে এই ধরনের বৈঠকের সম্ভাবনা খোলা রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের আগের মেয়াদে, কোরীয় ডিমিলিটারাইজড জোনে (ডিএমজেড) দুই নেতার মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল, যা প্রেসিডেন্টের টুইটের ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছিল।
আলোচনায় প্রকাশ, আগস্ট মাসে হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের সঙ্গে বৈঠকের পরেই কিমের সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। ওই বৈঠকে ইউন ট্রাম্পকে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) বাণিজ্য মন্ত্রীদের সম্মেলনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানান এবং কিমের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ তৈরি হতে পারে বলে জানান।
ট্রাম্প এই বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে বলেছিলেন, তিনি বিষয়টি বিবেচনা করবেন এবং কিমের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী। কিমও উত্তর কোরিয়ার পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্পের সঙ্গে বসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ধারণা থেকে সরে এসে, বাস্তবতাকে স্বীকার করে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চায়, তাহলে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে কোনো সমস্যা নেই।
তবে, ২০১৯ সালে দুই নেতার মধ্যে কোরীয় সীমান্ত অঞ্চলে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর পরিস্থিতি অনেক পাল্টেছে। ওই বৈঠকের প্রস্তুতিতে দক্ষিণ কোরিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
কিন্তু বর্তমানে, দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্টের প্রশাসন কিমের প্রতি আগের সরকারের তুলনায় ভিন্ন নীতি গ্রহণ করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উত্তর কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ বৈঠক নিয়ে দুই কোরিয়ার মধ্যে কোনো আলোচনা চলছে না।
যদিও ট্রাম্পের সম্ভাব্য সফরের আগে হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা দল দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে কিছু স্থান পরিদর্শন করেছে, তবে তারা ডিএমজেড এলাকা পরিদর্শন করেনি। এই ঘটনাটি ইঙ্গিত দেয় যে, ২০১৯ সালের মতো কিমের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা এখনো পর্যন্ত কম।
আগের বৈঠকগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, ট্রাম্প ও কিমের মধ্যেকার শীর্ষ সম্মেলনগুলো উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছিল। যদিও হ্যানয় ও সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোতে দুই পক্ষের মধ্যে বিস্তারিত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।
সূত্র: সিএনএন