মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী ল ফার্ম, জেনার অ্যান্ড ব্লক, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। এই মামলার কারণ হলো, ট্রাম্প প্রশাসন এমন একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছে, যা এই ল ফার্মের আইনজীবীদের সরকারি কিছু কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
মূলত, রাজনৈতিক সংযোগ এবং বিশেষ করে সাবেক বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলারের তদন্তের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, জেনার অ্যান্ড ব্লক-এর আইনজীবীরা বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন এবং মুলারের তদন্তে তাদের যোগসূত্র ছিল। এই কারণে ট্রাম্প প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
ল ফার্মটি মনে করে, এই নির্বাহী আদেশটি তাদের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী এবং এর মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক আইনি কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, এই আদেশের কারণে তারা তাদের কর্পোরেট ক্লায়েন্টদের হারাতে পারে, বিশেষ করে যারা সরকারি ঠিকাদার। এমন পরিস্থিতিতে, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের আইনজীবীদের সাক্ষাৎ করতে না দেওয়া হলে বা সরকারি ভবনগুলোতে প্রবেশে বাধা দিলে, তা তাদের ব্যবসার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে।
আদালতে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, এরই মধ্যে একটি ক্লায়েন্টকে জানানো হয়েছে যে, জেনার অ্যান্ড ব্লকের আইনজীবীদের বিচার বিভাগের সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।
ফলে, ওই ক্লায়েন্ট হয় তাদের আইনি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হবেন, অথবা কয়েক দিনের মধ্যে নতুন আইনজীবী খুঁজে বের করতে বাধ্য হবেন।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায়, জেনার অ্যান্ড ব্লকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা তাদের ক্লায়েন্টদের সঙ্গে এই আদেশ এবং এর প্রভাব নিয়ে কয়েকশ ঘণ্টা ধরে আলোচনা করেছেন।
তাদের রাজস্বের ৪০ শতাংশ আসে এমন অনেক বড় ক্লায়েন্ট, যারা ফেডারেল সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, তারাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শুধু জেনার অ্যান্ড ব্লকই নয়, এর আগে একই ধরনের পদক্ষেপের শিকার হয়েছে ‘পারকিন্স কোই’ নামের আরও একটি ল ফার্ম। তারাও ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিল এবং কিছু ক্ষেত্রে তাদের পক্ষে রায়ও এসেছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, জেনার অ্যান্ড ব্লকের মামলাটির শুনানিতেও একই ধরনের সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনি অঙ্গনে গভীর প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে, যারা ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বার অ্যাসোসিয়েশনগুলো ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তবে অনেক ল ফার্মই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে দ্বিধা বোধ করছে, কারণ তারা আশঙ্কা করছে, এর ফলে তারাও ট্রাম্প প্রশাসনের নিশানায় পরিণত হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন