ট্রাম্পের উপর আস্থা হারাচ্ছে পুরুষ সমাজ? বিস্ফোরক তথ্য!

যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের পুরুষ ভোটারদের মধ্যে তার প্রতি অসন্তোষ বাড়ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও পডকাস্টে এমন কিছু আলোচনা শোনা যাচ্ছে, যেখানে ট্রাম্পের নীতি ও কার্যক্রম নিয়ে অনেকে তাদের হতাশা প্রকাশ করছেন।

আমেরিকার রাজনীতিতে ‘ম্যানোস্ফিয়ার’ (পুরুষ-কেন্দ্রিক অনলাইন জগৎ) নামে পরিচিত একটি অংশের প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এখন ট্রাম্পের বিষয়ে ভিন্ন কথা বলছেন। উদাহরণস্বরূপ, জনপ্রিয় পডকাস্ট হোস্ট জো রোগান, যিনি একসময় ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিলেন, বর্তমানে তার অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করছেন। এছাড়া, প্রভাবশালী প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এবং ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) এর মালিক ইলন মাস্কও ট্রাম্পের কিছু সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি, বিশেষ করে ইরানের ওপর বোমা হামলা এবং কর বিষয়ক কিছু সিদ্ধান্ত তরুণ ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষের কারণ হয়েছে। এছাড়াও, জেফ্রি এপস্টিনের (যিনি যৌন পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন) মামলা নিয়েও অনেকে ট্রাম্প প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

গত নির্বাচনে তরুণ পুরুষ ভোটারদের সমর্থন পাওয়ার জন্য ট্রাম্প বিভিন্ন পডকাস্ট ও ইউটিউব চ্যানেলে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, তাদের মধ্যেই অনেকে ট্রাম্পের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, ৩৫ বছরের কম বয়সী পুরুষদের মধ্যে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অসন্তোষ রিপাবলিকানদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। তবে, এর ফলে ডেমোক্র্যাটরা সুবিধা পাবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়। ডেমোক্র্যাটরাও এখন ‘ম্যানোস্ফিয়ার’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। সাবেক পরিবহন মন্ত্রী এবং ২০২৮ সালের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পিটার বুটিগিগও সম্প্রতি একটি পডকাস্টে অংশ নিয়েছিলেন।

অন্যদিকে, অনেক ভোটার এখনো অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাদের মতে, জীবনযাত্রার মান, মূল্যস্ফীতি এবং কর্মসংস্থান তাদের প্রধান উদ্বেগের বিষয়। তারা মনে করেন, ট্রাম্প হয়তো তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

তবে, অনেকেই মনে করেন, ট্রাম্পের প্রতি এই অসন্তোষ সত্ত্বেও, তারা সহজে ডেমোক্র্যাটদের দিকে ঝুঁকবেন না। কারণ, তাদের রাজনৈতিক এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এখনো রক্ষণশীল।

মোটকথা, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা নিয়ে তরুণ পুরুষ ভোটারদের মধ্যে যে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, তা আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই পরিবর্তনের ফলে আগামী নির্বাচনে কী ধরনের প্রভাব পড়ে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *