যুক্তরাষ্ট্রের সরকার যখন আবারও অচলাবস্থায়, ট্রাম্পের জীবনযাত্রা কি একই আছে?
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে অচলাবস্থা নতুন কিছু নয়। অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে, যখন সরকারি কাজকর্ম প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
তবে এবারের পরিস্থিতি যেন কিছুটা ভিন্ন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচরণ এবং জীবনযাত্রায় এসেছে পরিবর্তন, যা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
২০১৮ সালের শেষের দিকে যখন একই ধরনের অচলাবস্থা দেখা দেয়, তখন ট্রাম্প নিজেকে হোয়াইট হাউসে ‘একা’ উল্লেখ করে সহানুভূতি কুড়িয়েছিলেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ক্রিসমাসের ছুটিতে পরিবারের সদস্যরা ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে আনন্দ করছে, আর তিনি ‘দুঃখী’ হয়ে হোয়াইট হাউসে সময় কাটাচ্ছেন।
এমনকি তিনি এমনও বলেছিলেন যে, মাসখানেক ধরে তিনি হোয়াইট হাউস থেকে বের হননি। সেই সময়কার ছবিগুলোতে দেখা যায়, তিনি যেন একাকীত্বে ভুগছেন।
কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অচলাবস্থার মধ্যে ট্রাম্প কয়েকবার মার-এ-লাগোতে গিয়েছেন এবং সেখানে সময় কাটিয়েছেন।
এছাড়া, তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন এবং এমনকি গলফও খেলেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই আচরণ আগের বারের চেয়ে বেশ আলাদা।
২০১৮ সালের অচলাবস্থার সময় তিনি বিষয়টিকে সংবেদনশীলভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিলেন। সরকারি কর্মচারীরা যখন বেতন পাচ্ছিলেন না, তখন তার ঘন ঘন অবকাশযাপন অনেকের কাছে দৃষ্টিকটু মনে হতে পারত।
এই পরিবর্তন অনেককে ভাবিয়ে তুলেছে।
যেখানে সরকারি কাজকর্ম স্থবির হয়ে আছে, সেখানে ট্রাম্পের এই ধরনের জীবনযাত্রা কতটুকু সঙ্গতিপূর্ণ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সমালোচকদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের এই ধরনের আচরণ ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের প্রতি তার উদাসীনতা প্রকাশ করে।
আগের অচলাবস্থার সময় ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে একাকী সময় কাটানোর বিষয়টি তার কর্মকর্তাদের হতাশ করেছিল।
সেই সময় তিনি ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে রাজি হচ্ছিলেন না।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে, অনেকের ধারণা হয়েছিল, ট্রাম্প যেন একপ্রকার বন্দী জীবন কাটাচ্ছিলেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে তারা প্রস্তুত।
তবে ট্রাম্প এখনো পর্যন্ত আলোচনা শুরু করতে খুব একটা আগ্রহী হননি।
তিনি ডেমোক্র্যাটদের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছেন এবং অচলাবস্থা নিরসনে নিজের শর্ত পূরণ করতে চাইছেন।
ট্রাম্প মনে করেন, অচলাবস্থার জন্য ডেমোক্র্যাটরাই দায়ী এবং তারাই এর ফল ভোগ করবে।
তিনি এমন কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছেন, যা ডেমোক্র্যাটদের উপর চাপ সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে, ট্রাম্পের এই কৌশল কতটা সফল হবে, তা বলা কঠিন।
কারণ জনমত জরিপে দেখা গেছে, অচলাবস্থার জন্য অনেক আমেরিকান ট্রাম্প এবং রিপাবলিকান পার্টিকে দায়ী করছেন।
এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের ভূমিকা এবং তার জীবনযাত্রার এই পরিবর্তন নিঃসন্দেহে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অচলাবস্থা নিরসনে ট্রাম্পের এই কৌশল কতটা কার্যকর হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন