মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ। প্রথম মেয়াদে শেয়ার বাজারের উত্থান-পতনকে বেশ গুরুত্ব দিলেও, এবার যেন তার ভিন্ন চিত্র।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি এবং সরকারের ব্যয় সংকোচনের পরিকল্পনা বাজারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেয়ার বাজারের সূচক এস&পি ৫০০-এর সাম্প্রতিক দরপতন এরই ইঙ্গিত দেয়।
এমনকি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার বাজারকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ট্রাম্পের আগের মতো পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনাও কম। আগে বিনিয়োগকারীরা মনে করতেন, বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হলে ট্রাম্প প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, যা ‘ট্রাম্প পুট’ নামে পরিচিত ছিল।
কিন্তু এখন তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধি এবং সরকারি ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্তে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
ফেডারেল রিজার্ভও ২০২৫ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং দুর্বল কর্মসংস্থানের বাজারের বিষয়ে সতর্ক করেছে তারা।
ট্রাম্প প্রশাসনের এমন নীতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা এবং তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্তের কারণে বিনিয়োগকারীরা দ্বিধাগ্রস্ত।
তারা মনে করছেন, এই নীতিগুলো অর্থনীতির জন্য একটি পরীক্ষা স্বরূপ, যার ফল নিয়ে তারা সন্দিহান। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য বাজারের এই অস্থিরতাকে দীর্ঘমেয়াদী লাভের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তাদের মতে, সুষম কর নীতি, নিয়ন্ত্রণ শিথিল এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে বাজার ভালো করবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজারের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের আরও মনোযোগী হওয়া উচিত।
আগামী ২ এপ্রিল ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যেদিন যুক্তরাষ্ট্র তার বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এই পদক্ষেপের কারণে বাজারে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিনিয়োগকারীরা তাদের উদ্বেগের কথা জানালেও, ট্রাম্প প্রশাসন সে বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। এমনকি, বাজারের এই প্রতিক্রিয়ার কারণে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মোটকথা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাণিজ্য নীতি, সরকারি ব্যয় সংকোচন এবং শুল্ক বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলো বাজারের জন্য উদ্বেগের কারণ।
তবে ট্রাম্প প্রশাসন বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখছে। এই পরিস্থিতিতে বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। তথ্য সূত্র: সিএনএন