আতঙ্ক! ট্রাম্প মিডিয়ার বিশাল বিটকয়েন বিনিয়োগ!

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মালিকানাধীন একটি সংস্থা, ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপ, বিটকয়েনে বিনিয়োগের জন্য প্রায় ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার সংগ্রহ করতে যাচ্ছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা তাদের আয়ের উৎসকে আরও বিস্তৃত করতে এবং আর্থিক খাতে প্রবেশ করতে চাইছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা তাদের সর্বশেষ শেয়ারের মূল্যে প্রায় ১৫০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করবে এবং ১০০০ কোটি ডলারের রূপান্তরযোগ্য নোট ইস্যু করবে, যার মূল্য ৩৫ শতাংশ বেশি।

সংস্থাটি তাদের বিবৃতি আরও জানিয়েছে, এই তহবিল ব্যবহার করে তারা একটি ‘বিটকয়েন ট্রেজারি’ তৈরি করবে। ট্রাম্প মিডিয়ার ব্যালেন্স শীটে বিদ্যমান নগদ এবং স্বল্প-মেয়াদী বিনিয়োগের সঙ্গে এই বিটকয়েন রাখা হবে।

প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে তাদের নগদ ও স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭৫ কোটি ৯০ লক্ষ ডলার। বিটকয়েন সংরক্ষণের জন্য ক্রিপ্টো প্ল্যাটফর্ম অ্যাঙ্কোরেজ ডিজিটাল এবং ক্রিপ্টো.কম-কে তারা বেছে নিয়েছে।

ট্রাম্প মিডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিন নুনেজ এই পদক্ষেপকে আর্থিক স্বাধীনতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি একে কোম্পানির ‘আমেরিকা ফার্স্ট নীতি’-র সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ অর্জনের একটি ‘বড় পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এর মূল কোম্পানিটির শেয়ারের দাম শুরুতে ৬ শতাংশ কমে গিয়েছিল। ট্রাম্প মিডিয়া আর্থিক পরিষেবা খাতে প্রবেশ করতে চাইছে এবং এর জন্য সম্ভাব্য একত্রীকরণ ও অধিগ্রহণের দিকে নজর রাখছে।

গত মাসে, তারা ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ডসহ খুচরা বিনিয়োগ পণ্য চালু করার জন্য একটি চুক্তি করেছে, যা ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

আকাশচুম্বী অট্টালিকা এবং গলফ ক্লাব-এর সঙ্গে পরিচিত ট্রাম্প পরিবার ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি করেছে। তারা দ্রুত কয়েকশ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

তাদের অন্যান্য ক্রিপ্টো উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে ট্রাম্প নন-ফাঙ্গিবল টোকেন (এনএফটি), একটি মেম কয়েন, আমেরিকান বিটকয়েন নামক একটি নতুন গঠিত বিটকয়েন উৎপাদকের অংশীদারিত্ব এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফাইনান্সিয়াল।

তবে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে এই আগ্রহ আইনপ্রণেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ডেমোক্রেটিক সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন গত মাসে মার্কিন সিকিউরিটিজ রেগুলেটরকে ট্রাম্প মিডিয়া চালু করতে যাওয়া এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) তত্ত্বাবধানের পরিকল্পনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছেন।

আগে ক্রিপ্টোকারেন্সিকে অস্থির এবং ‘বাতাসের উপর ভিত্তি করে’ তৈরি হওয়া মূল্য হিসাবে উল্লেখ করা ট্রাম্প তার এই প্রযুক্তির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছেন। ২০২৪ সালের মে মাসে তার ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি ক্রিপ্টো শিল্পের সমর্থকদেকে তার পুনরায় নির্বাচনে জেতার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

গত সপ্তাহে, ট্রাম্প তার অপর একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রকল্প, ‘$ট্রাম্প’ মেম কয়েনের শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একটি বিলাসবহুল নৈশভোজে অংশ নেন, যা প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার দায়িত্বের সঙ্গে ব্যক্তিগত লাভের মিশ্রণের অভিযোগের জন্ম দিয়েছে।

এই খবর বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত বহন করে। উন্নত বিশ্বে ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে, যা বাংলাদেশের ডিজিটাল মুদ্রা বাজারের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

যদিও, বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সির আইনি অবস্থা এখনো পরিষ্কার নয়। বিনিয়োগের আগে তাই অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *