মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি: ট্রাম্পের কাছে কি সুযোগ?

শিরোনাম: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রচেষ্টা: ফিলিস্তিনের জাতিসংঘের সদস্যপদ কি সমাধান?

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে। ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টি এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কূটনীতি, বিশেষ করে ইরান ও হামাসের সঙ্গে আলোচনা, এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এই সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন রয়েছে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রতি, যেখানে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে। তবে, ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের সদস্যপদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকার ভেটো ক্ষমতা একটি বড় বাধা। যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে, তাহলে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন যদি ফিলিস্তিনের সদস্যপদের প্রতি সমর্থন জানায়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসার সম্ভাবনা বাড়বে। এর ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। কিন্তু ইসরায়েলের কট্টরপন্থী সরকার শান্তির পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে এবং ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের কূটনৈতিক তৎপরতা ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ক্ষেত্রে দৃশ্যমান হয়েছে। ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে, এবং ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। হামাসের সঙ্গে আলোচনা করে একজন বন্দীকে মুক্ত করা হয়েছে। এসব ঘটনা প্রমাণ করে, ট্রাম্প প্রশাসন কৌশলগত স্বার্থকে সবার উপরে স্থান দেয় এবং শান্তিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে আরব দেশগুলোর অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা দীর্ঘদিন ধরে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে সমর্থন দিয়ে আসছে। ২০০২ সালের বৈরুত সম্মেলনে গৃহীত আরব শান্তি পরিকল্পনাতেও ইসরায়েলকে ১৯৬৭ সালের সীমানায় ফিরে যেতে এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে।

সুতরাং, ট্রাম্প এবং আরব নেতাদের সামনে এখন একটি ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে। দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের মাধ্যমে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। একইসঙ্গে, লেবানন, সিরিয়া এবং ইরানের সঙ্গেও শান্তি চুক্তি সম্ভব হতে পারে। ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু চুক্তি এবং ইরানের উপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে, এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে কেবল মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্যই একটি ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *