আশ্চর্য! ট্রাম্পের দাবিতে কি এমএস-১৩ গ্যাংয়ের ট্যাটু ছিল সেই ব্যক্তির হাতে?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং এবিসি নিউজের মধ্যে সম্প্রতি একটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিতর্কটি ছিল, সালভাদরের নাগরিক কিলমার আরমান্দো অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার হাতে ‘এমএস-১৩’ গ্যাংয়ের প্রতীকী চিহ্ন খোদাই করা আছে কিনা, যা নিয়ে ট্রাম্পের দাবি ছিল।

গত মার্চ মাসে আদালত অবমাননা করে অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে একটি ছবি শেয়ার করেন, যেখানে গার্সিয়ার হাতের ট্যাটুগুলো দেখানো হয়। ট্রাম্পের দাবি ছিল, এই ট্যাটুগুলো এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সদস্যতার প্রমাণ।

ছবিটিতে গার্সিয়ার বাম হাতের চারটি আঙুলে ভিন্ন ধরনের ট্যাটু দেখা যায়। এর মধ্যে একটিতে গাঁজার পাতা, একটিতে হাসিখুশি মুখের প্রতিকৃতি, একটি ক্রস এবং অন্যটিতে একটি মাথার খুলির ছবি ছিল। এছাড়াও, প্রত্যেক ট্যাটুর উপরে ‘এম’, ‘এস’, ‘১’ এবং ‘৩’ সংখ্যাগুলোও মুদ্রিত ছিল।

এবিসি নিউজের সাংবাদিক টেরি মরান ট্রাম্পের এই দাবির বিরোধিতা করেন। তিনি জানান, ছবিগুলো যাচাই করা হয়েছে এবং ট্যাটুর এই ব্যাখ্যা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। মরান আরও উল্লেখ করেন, ছবিগুলো সম্ভবত ‘ফটোশপ’ করা হয়েছে।

ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, “এম, এস, এক, তিন—এটা এমএস-১৩ ছাড়া আর কিছুই নয়।

তবে, অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার হাতে থাকা ট্যাটুর বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, ছবিগুলোতে এমএস-১৩ গ্যাংয়ের পরিচিত কোনো চিহ্ন নেই। মারিজুয়ানা পাতা, ক্রস বা মাথার খুলির মতো সাধারণ প্রতীকগুলো সাধারণত গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত নয় এমন ব্যক্তিরাও ব্যবহার করে থাকে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ট্যাটু গ্যাং সদস্যতার সুস্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয় না। তাদের মতে, ট্যাটু গ্যাং সদস্যতার একটি আনুষঙ্গিক প্রমাণ হতে পারে, তবে এটিকে চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে ধরা যায় না।

আদালতের নথি অনুযায়ী, ২০১৯ সালে অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে গ্রেফতারের সময় একজন পুলিশ সোর্স দাবি করেছিলেন, তিনি এমএস-১৩ সদস্য। যদিও পরে আদালতের শুনানিতে এই তথ্যের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার আইনজীবীরা জানান, এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার অ্যাব্রেগো গার্সিয়া ও আরও অনেককে এল সালভাদরে ফেরত পাঠিয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সদস্যতার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে, অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার আইনজীবী জানিয়েছেন, তাদের মক্কেলকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত ছিল বেআইনি।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *