যুদ্ধ ঘোষণা? ট্রাম্প-নিউজমের দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত ক্যালিফোর্নিয়া!

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে পুরোনো বিবাদ আবারও মাথাচাড়া দিয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসন-বিরোধী অভিযানে ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিলে এই বিরোধ নতুন করে শুরু হয়।

গভর্নর নিউসম এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন এবং এর প্রতিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা রিপাবলিকান দলের শীর্ষ নেতা ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ কাণ্ডারীদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের নীতির কড়া সমালোচনা করে আসছেন।

বিশেষ করে অভিবাসন, পরিবেশ নীতি এবং রাজ্যের আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বিভিন্ন সময় প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যদিকে, নিউসম মনে করেন ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ গণতন্ত্রের প্রতি এক ধরনের আঘাত।

খবরে প্রকাশ, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর এক জরুরি আবেদনে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিনদের অভিবাসন অভিযানে ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। নিউসমের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসন কেবল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করার গণ্ডি পেরিয়ে গেছে।

তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “ক্যালিফোর্নিয়া প্রথম হতে পারে, তবে এখানেই এর শেষ হবে না। অন্যান্য রাজ্যও এর শিকার হবে। আমাদের চোখের সামনে গণতন্ত্র আক্রান্ত হচ্ছে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে আগামী দিনের রাজনৈতিক সমীকরণ। নিউসম সম্ভবত ২০২৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে নিজের প্রভাব বাড়াতে চাইছেন।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ক্যালিফোর্নিয়ার সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের বৈরিতারই ধারাবাহিকতা। অতীতেও ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়ার নীতির সমালোচনা করেছেন এবং রাজ্যটিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবহেলার অভিযোগ করেছেন।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে অনেকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেও দেখছেন, যা ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার ভোটারদের মধ্যে সমর্থন বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।

তবে, অতীতে নিউসম এবং ট্রাম্পের মধ্যে কিছু বিষয়ে সহযোগিতার নজিরও দেখা গেছে। বিশেষ করে দাবানল এবং কোভিড-১৯ মহামারীর সময় তারা একসঙ্গে কাজ করেছেন। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই সহযোগিতা ছিল নিতান্তই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য, যা দীর্ঘমেয়াদে তাদের সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলেনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ঘটনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে। নিউসমের এই পদক্ষেপ দেশের অন্যান্য রাজ্যের গভর্নরদেরও ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে উৎসাহিত করতে পারে।

একইসঙ্গে, এটি ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে ট্রাম্প বিরোধী মনোভাবকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *