সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ঘিরে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা একটি মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে অত্যন্ত গোপনীয় সামরিক পরিকল্পনাসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান করেছেন। এই ঘটনায় জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হয়েছে কিনা, তা নিয়ে এখন তদন্ত চলছে।
জানা গেছে, অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের পাঠানো তথ্যের মধ্যে ছিল ইয়েমেনে মার্কিন সামরিক অভিযান সংক্রান্ত বিস্তারিত পরিকল্পনা। এই তথ্য আদান-প্রদানের সময় দ্য আটলান্টিক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক জেফরি গোল্ডবার্গও সেই গ্রুপ চ্যাটে ছিলেন, যা নিরাপত্তা বিধির গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে, কারণ এই কর্মকর্তাদের অনেকেই অতীতে সরকারি গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়ে বেশ সোচ্চার ছিলেন। এমনকি, তাঁরা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে সরকারি গোপনীয় তথ্য প্রকাশের কঠোর সমালোচনাও করেছিলেন। বিশেষ করে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত ই-মেইল সার্ভার ব্যবহার নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন।
তাঁদের সেই সময়ের মন্তব্যগুলো এখন তাঁদের বিরুদ্ধেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, সিনেটর মার্কো রুবিও, যিনি একসময় হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল ব্যবহারের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন, তিনিও এই গ্রুপ চ্যাটে ছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি ২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়, এমনকি হিলারি ক্লিনটনও নন।” একইসঙ্গে তিনি গোপনীয় তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা কক্ষের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছিলেন।
আরেকজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা, পিট হেগসেথ, যিনি একসময় ফক্স নিউজের উপস্থাপক ছিলেন, হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল ব্যবহারের সমালোচনা করে একে ‘অপরাধমূলক’ আখ্যা দিয়েছিলেন। এমনকি, তিনি বলেছিলেন, হিলারি ক্লিনটন যা করেছেন, তার এক শতাংশের জন্যও অনেককে জেলে যেতে হয়েছে।
এই ঘটনার পর, বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, গোপনীয় তথ্য এভাবে আদান-প্রদান করা হলে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি ডেকে আনতে পারে। তথ্য ফাঁস হওয়ার এই ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘গোয়েন্দাগিরি আইন’ লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হতে পারে। এই আইন অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত তথ্যের অপব্যবহার শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আর্টিকেলটি সিএনএন সূত্রে জানা গেছে।