মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অফ পিস (ইউএসআইপি)-এর কর্মীদের গণহারে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন। শুক্রবার সন্ধ্যায় কর্মীদের হাতে বরখাস্তের নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়। সরকারের ব্যয় সংকোচনের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র আনা কেলি গণমাধ্যমকে জানান, “করদাতারা বছরে প্রায় ৫৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করে এমন একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান দেখতে চান না, যারা শান্তিরক্ষার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।”
এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে ইউএসআইপি’র প্রাক্তন আইনজীবী জর্জ ফুটে জানান, মূলত সরকারি ব্যয়ের বোঝা কমানোর লক্ষ্য নিয়েই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রোনাল্ড রেগান সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক শান্তি ও সংঘাত নিরসনে গবেষণা, নীতি বিশ্লেষণ, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে সহায়তা করে থাকে। ইউএসআইপি-র বার্ষিক বাজেট কংগ্রেসের মাধ্যমে আসে, যা প্রায় ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়াও তাদের প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলারের একটি ফান্ডও রয়েছে।
জানা গেছে, বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন যারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শান্তি মিশনে কাজ করতেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ কলম্বিয়া, কম্বোডিয়া এবং পাপুয়া নিউগিনি সহ বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন। জর্জ ফুটে জানান, ইউএসআইপি কর্মীদের কাজ শুধুমাত্র সরকারি অর্থে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। আদালতের কাছে এই বরখাস্ত প্রক্রিয়াকে অবৈধ ঘোষণার জন্য আবেদন করা হয়েছে। আগামী ২৫শে এপ্রিলের মধ্যে মামলার সব কাগজপত্র জমা দেওয়ার কথা রয়েছে এবং ২৮শে এপ্রিলের সপ্তাহে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউএসআইপি’র সদর দপ্তর ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত। বিভিন্ন সময়ে এখানে বড় ধরনের অনুষ্ঠান ও বিয়ের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এই মুহূর্তে এর ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের গণহারে বরখাস্ত করার ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন