ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরে ‘পারস্য উপসাগর’ বিতর্কের অবসান? বাংলাদেশিদের জন্য এর গুরুত্ব
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর আসন্ন সফরে ‘পারস্য উপসাগর’ নামটি নিয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তিনি সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (United Arab Emirates) সফরকালে এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলে জানা গেছে।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প নিজেই এ কথা জানান।
দীর্ঘদিন ধরে, এই উপসাগরের নামকরণের বিষয়টি আরব বিশ্ব এবং ইরানের মধ্যে বিতর্কের একটি প্রধান কারণ। ইরান ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে ‘পারস্য উপসাগর’ নামটির প্রতি সমর্থন জানায়, যেখানে প্রাচীন মানচিত্রসহ বিভিন্ন প্রমাণে এই অঞ্চলের সঙ্গে তাদের সংযোগের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাকসহ অন্যান্য আরব দেশগুলো ‘আরব উপসাগর’ বা শুধু ‘উপসাগর’ নাম ব্যবহার করে থাকে।
এই নামকরণের বিতর্ক শুধু নামের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের অংশ। ট্রাম্পের সম্ভাব্য এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পক্ষ থেকে তীব্র আপত্তি জানানো হয়েছে।
দেশটির কর্মকর্তারা এটিকে ইরানের প্রতি একটি ‘শত্রুভাবাপন্ন’ আচরণ হিসেবে দেখছেন। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এই বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, এমন কোনো পদক্ষেপ ‘ইরানের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ’ সৃষ্টি করবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই ধরনের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ পদক্ষেপ ‘সকল ইরানীর জন্য অপমানজনক’।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তন প্রায়শই আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করে, বিশেষ করে যখন এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে এর সম্পর্ক জড়িত থাকে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও, মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাপ্রবাহ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানকার শ্রমিকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিভিন্ন উপসাগরীয় দেশে কর্মরত।
তাছাড়া, বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা অনেকাংশে এই অঞ্চলের তেলের ওপর নির্ভরশীল। তাই, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি নামের পরিবর্তন নয়, বরং এর গভীর রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব থাকতে পারে, যা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘গভ অফ আমেরিকা’ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এবার ‘পারস্য উপসাগর’ নিয়ে তাঁর এই সিদ্ধান্তের দিকে এখন সবার দৃষ্টি। এই সিদ্ধান্তের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা