ফারসি উপসাগরের নাম বদলের পরিকল্পনা ট্রাম্পের, তীব্র প্রতিবাদ!

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে, এমনটাই জানা যাচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই উপসাগরের নতুন নাম ‘আরব উপসাগর’ অথবা ‘আরবিয়ান উপসাগর’ রাখার কথা ভাবা হচ্ছে।

সিএনএন সূত্রে খবর, নাম পরিবর্তনের এই পরিকল্পনা মূলত ট্রাম্পের আসন্ন মধ্যপ্রাচ্য সফরের সঙ্গে সম্পর্কিত।

তিনি শীঘ্রই সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন।

নাম পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্তের পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে।

আরব দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছে, যা ইরানের দক্ষিণে অবস্থিত।

তাদের যুক্তি হলো, এই অঞ্চলের দেশগুলোর পরিচয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি নতুন নাম দেওয়া হোক।

তবে, এই ধরনের পদক্ষেপে ইরানের তীব্র প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ, ইরান এই নামের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে এর স্বপক্ষে নিজেদের অবস্থান বজায় রেখেছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এক টুইট বার্তায় এই পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা করেছেন।

তিনি বলেছেন, “ঐতিহাসিকভাবে প্রতিষ্ঠিত পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের কোনো রাজনৈতিক চেষ্টা হলে, তা ইরান, যুক্তরাষ্ট্র এবং সারা বিশ্বের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেবে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, “পারস্য উপসাগর নামটি শত শত বছর ধরে পরিচিত এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোসহ সকল কার্টোগ্রাফার স্বীকৃতি দিয়েছে।

এমনকি ১৯৬০ এর দশকেও এই অঞ্চলের নেতারা তাঁদের সরকারি যোগাযোগের জন্য এই নামটি ব্যবহার করতেন।”

আগে, ট্রাম্প মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘আমেরিকা উপসাগর’ রাখার জন্য একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন।

যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে ভিন্ন মত দেখা গেছে।

হাউস রিপাবলিকানরা নাম পরিবর্তনের এই বিষয়টিকে আইনসিদ্ধ করতে চাইছেন।

তবে, এই ইস্যুতে তারা কিছু বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

এদিকে, সংবাদ সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েটেড প্রেস’ (এপি) জানিয়েছে, তারা তাদের সংবাদ এবং প্রভাবশালী স্টাইলবুকে ‘মেক্সিকো উপসাগর’ নামটি ব্যবহার করা চালিয়ে যাবে।

একইসঙ্গে তারা ‘আমেরিকা উপসাগর’ নামটিকেও স্বীকৃতি দেবে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম হিসেবে, এপি বিশ্বজুড়ে তাদের গ্রাহকদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ জটিল।

এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ রয়েছে, যার মধ্যে স্থাননাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

নাম পরিবর্তনের এই ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষ করে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।

বাংলাদেশের জন্য, এই ধরনের পরিবর্তন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং জ্বালানি নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।

এই ঘটনার পরবর্তী পরিস্থিতি এখনো স্পষ্ট নয়।

তবে, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে এর প্রভাব অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *