এনার্জি স্টার প্রোগ্রাম বন্ধের পরিকল্পনা: ট্রাম্প প্রশাসনের চাঞ্চল্যকর সিদ্ধান্ত!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তন এবং শক্তি সাশ্রয়ের উপর নজরদারি করা দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ বন্ধ করার প্রস্তুতি চলছে, যার মধ্যে রয়েছে বহুল পরিচিত ‘এনার্জি স্টার’ প্রোগ্রামও।

জানা গেছে, পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (EPA)-র জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগ এবং জলবায়ু সুরক্ষা অংশীদারিত্ব বিভাগ, উভয়কেই সম্ভবত গুটিয়ে ফেলা হবে। এই পদক্ষেপের ফলে গ্রিনহাউস গ্যাস রিপোর্টিং প্রোগ্রাম এবং মিথেন গ্যাস সংক্রান্ত ই পি এ-র অংশীদারিত্বের মতো বেশ কয়েকটি জলবায়ু সম্পর্কিত প্রকল্পের উপর প্রভাব পড়তে পারে।

উল্লেখ্য, মিথেন একটি অত্যন্ত দূষণকারী গ্যাস যা তেল ও গ্যাস, কৃষি এবং ল্যান্ডফিল থেকে নির্গত হয় এবং যা পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

এছাড়াও, দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা ‘এনার্জি স্টার’ প্রোগ্রামটিও বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই প্রোগ্রামের অধীনে, শক্তি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং ভোক্তাদের এ ধরনের পণ্য খুঁজে পেতে সহায়তা করা হয়।

এর পাশাপাশি, এনার্জি স্টার প্রোগ্রাম গ্রাহকদের এয়ার কন্ডিশনার, হিট পাম্প, রেফ্রিজারেটর এবং ওয়াশিং মেশিনের মতো শক্তি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতির খরচ কমাতে ট্যাক্স ক্রেডিট পেতেও সাহায্য করে।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও ‘এনার্জি স্টার’-কে ভেঙে দেওয়া বা ব্যক্তিগত মালিকানায় দেওয়ার কথা ভেবেছিল, তবে দ্বিতীয় মেয়াদে এই প্রোগ্রামের ভবিষ্যৎ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বিভিন্ন দল এই প্রোগ্রামটি রক্ষার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

এই পরিবর্তনের ফলে ই পি এ-র কতজন কর্মচারী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে জানা গেছে, সংস্থাটি কর্মীদের পদত্যাগের প্রস্তাব দিচ্ছে এবং এই প্রস্তাবের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে, কতজন কর্মীর প্রয়োজন হবে, সে বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ই পি এ-র একজন মুখপাত্র সিএনএন-কে জানিয়েছেন, সংস্থাটি ইতিমধ্যে “মার্কিন জনগণের জন্য পরিষ্কার বাতাস, জল এবং ভূমি সরবরাহ করার জন্য সংস্থার সাংগঠনিক উন্নতি” ঘোষণা করেছে।

মুখপাত্র আরও বলেন, “এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ই পি এ কর্মীব কাঠামোতে সাংগঠনিক উন্নতি সাধন করছে, যা সরাসরি আমেরিকানদের উপকার করবে এবং সংস্থার মূল লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

অন্যদিকে, এনার্জি স্টারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে প্রথম বুশ প্রশাসনের সময় ‘এনার্জি স্টার’ প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছিল। প্রোগ্রামটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এটি “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শক্তি সাশ্রয়ের সবচেয়ে স্বীকৃত প্রতীক”, এবং দেশটির ৯০ শতাংশেরও বেশি পরিবার এই লেবেলটি সম্পর্কে অবগত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রস্তুতকারক, খুচরা বিক্রেতা, বাড়ি নির্মাতা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের মধ্যে এই প্রোগ্রামের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশ নীতিমালায় এই ধরনের পরিবর্তন নিঃসন্দেহে উদ্বেগের কারণ। কারণ এর ফলে দূষণ বাড়তে পারে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও তীব্র হতে পারে।

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ একটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বাংলাদেশকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে।

অতএব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *