ভয়ংকর পরিণতি! ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বন্ধ হচ্ছে পাবলিক ব্রডকাস্টিং, শোক প্রকাশ

যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (সিপিবি) বন্ধ হতে চলেছে, যা দেশটির গণমাধ্যম জগতে একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে রিপাবলিকানদের অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্তের কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এর ফলে স্থানীয় পর্যায়ে পিবিএস (PBS) এবং এনপিআর (NPR)-এর মতো পাবলিক মিডিয়া স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার স্টেশনগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সিপিবি-কে আগামী দুই বছরের জন্য বরাদ্দকৃত ১.১ বিলিয়ন ডলার তহবিল বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিপিবি-র প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাট্রিসিয়া হ্যারিসন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “সিপিবি’র জন্য ফেডারেল তহবিল রক্ষার জন্য লাখো আমেরিকান চেষ্টা চালিয়েছিলেন, কিন্তু এখন আমাদের কার্যক্রম বন্ধ করার কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।”

এই কর্পোরেশনটি ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এখন তারা স্থানীয় স্টেশনগুলোকে বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় সহায়তা করার চেষ্টা করছে।

হ্যারিসন সতর্ক করেছেন, ফেডারেল সহায়তা ছাড়া কিছু স্টেশন, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলের স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

যদিও অনেক বড় স্টেশনের দর্শক-শ্রোতাদের অনুদান সহ অন্যান্য উৎস থেকে অর্থ আসে, তবে ফেডারেল তহবিল কমে যাওয়ায় তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এনপিআর-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথরিন মাহের বলেছেন, “এই বন্ধের প্রভাব প্রতিটি পাবলিক মিডিয়া সংস্থায় অনুভূত হবে, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই দেশের প্রতিটি সম্প্রদায়ের উপর এর প্রভাব পড়বে যারা পাবলিক ব্রডকাস্টিংয়ের উপর নির্ভরশীল।”

জানা গেছে, আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বর সিপিবি-র অর্থ ফুরিয়ে গেলে এর প্রায় ১০০ জন কর্মীর পদ বিলুপ্ত হবে। তবে একটি ছোট দল আগামী জানুয়ারী পর্যন্ত কার্যক্রম চালাবে, যাতে সবকিছু গুছিয়ে আনা যায়।

ট্রাম্প এবং অন্যান্য রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মতে, এই কর্পোরেশন বিলুপ্ত করা “বামপন্থী পক্ষপাত”-এর বিরুদ্ধে একটি জয়। তাঁদের অভিযোগ, এনপিআর এবং পিবিএস-এর অনুষ্ঠানে প্রায়ই এই ধরনের পক্ষপাত দেখা যায়।

অন্যদিকে, পাবলিক মিডিয়া সমর্থনকারীরা বলছেন, এর ফলে একটি অলাভজনক টেলিভিশন ও রেডিও যুগের অবসান ঘটবে এবং সরকার এই ক্ষেত্র থেকে পুরোপুরিভাবে সরে আসবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি অর্থায়নে মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। এই ঘটনার মাধ্যমে, গণমাধ্যম এবং সরকার একে অপরের সঙ্গে কিভাবে সম্পর্ক বজায় রাখে, সেই বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আমরা দেখি, তাহলে সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন-এর কার্যক্রমের সঙ্গে এর একটি তুলনা করা যেতে পারে। এখানেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং এর অর্থায়নের বিষয়টি একটি জটিল বিষয়। বিভিন্ন দেশে এর সমাধান বিভিন্ন রকম হতে পারে, তবে মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *