মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২ এপ্রিলের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের উপর শুল্ক আরোপের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন। একইসাথে, তিনি রাশিয়া ও ইরানের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
যদিও তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এবং বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ট্রাম্প ২ এপ্রিলকে ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এই দিনে নির্দিষ্ট কিছু দেশের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে পারেন। এছাড়াও, তিনি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারেন গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের উপর।
সম্প্রতি এনবিসি নিউজের ক্রিস্টেন ওয়েলকারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, রাশিয়া ও ইরানের বিরুদ্ধেও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মন্তব্যের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, “পুতিন যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বিষয়ে কথা বলা শুরু করেন, তখন আমি খুবই ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, “যদি রাশিয়া ও আমি ইউক্রেনে রক্তপাত বন্ধ করতে কোনো চুক্তিতে উপনীত হতে না পারি এবং যদি আমি মনে করি এর জন্য রাশিয়া দায়ী, তাহলে আমি রাশিয়ার তেলের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করব।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, ইরানের সঙ্গে কোনো চুক্তি না হলে দেশটির ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। উল্লেখ্য, এর আগে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে হওয়া ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কিছু প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও শুল্কের প্রভাব নিয়ে তাঁর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।
হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট এক সাক্ষাৎকারে জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি এবং খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “যদি দেশগুলো মূল্যবান কিছু দিতে রাজি থাকে, তবেই আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
আগের মেয়াদে ট্রাম্প শুল্ককে একটি গুরুত্বপূর্ণ দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ বাজারের অস্থিরতা বাড়ায় এবং মার্কিন ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।
ট্রাম্পের বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা পিটার নাভারো অবশ্য ভোক্তাদের উপর মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, শুল্ক আসলে কর হ্রাসেরই নামান্তর। তিনি আরও যোগ করেন, “শুল্ক কর্মসংস্থান বাড়ায় এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এর মাধ্যমে আমেরিকা আরও শক্তিশালী হবে।
তবে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শুল্কের কারণে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি পেলে অনেক পণ্যের দাম বাড়বে, বিশেষ করে যে সমস্ত পণ্য যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করে থাকে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন