ফ্রি এয়ার ফোর্স ওয়ান: কাতার থেকে উপহার, ট্রাম্পের জন্য আইনি জটিলতা?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ব্যবহারের জন্য কাতার সরকারের কাছ থেকে একটি বিলাসবহুল বিমান উপহার হিসেবে গ্রহণ করার সম্ভাবনা নিয়ে বর্তমানে আলোচনা চলছে। যদিও বিষয়টি এখনো আইনি পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে, তবে এই প্রস্তাব ঘিরে ইতিমধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাতার সরকারের কাছ থেকে বোয়িং ৭৪৭-৮ মডেলের একটি বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ান হিসেবে ব্যবহারের জন্য গ্রহণ করার বিষয়টি এখনো বিবেচনাধীন। এই বিষয়ে আইনি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট নিশ্চিত করেছেন, সরকারের কাছে কোনো অনুদান আসলে তা অবশ্যই আইনের সম্পূর্ণ বিধি মেনে করা হবে।

জানা গেছে, এই বিমানটি কাতারের রাজপরিবার থেকে উপহার হিসেবে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। যদি প্রস্তাবটি গৃহীত হয়, তবে বিমানটি সংস্কার করে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বহরে যুক্ত করা হবে। তবে এই “উপহার”-এর বিনিময়ে কোনো কিছু চাওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে লেভিট জানান, এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ, তারা জানেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কেবল আমেরিকান জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করেন।

অন্যদিকে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি এটিকে একটি “উপহার” হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, বিনামূল্যে পাওয়া একটি বিমান প্রত্যাখ্যান করা “বোকা”র কাজ হবে। ট্রাম্প আরও জানান, মেয়াদ শেষে বিমানটি সরাসরি তার প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরিতে রাখা হবে।

তবে, এই প্রস্তাব নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমানের বিশাল মূল্য এবং বিদেশি সরকারের কাছ থেকে পাওয়া উপহারের নৈতিক দিকগুলো নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একজন কাতারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিমানটি কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হবে, যা একটি সরকার-থেকে-সরকার চুক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে। এরপরে, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ বিমানটিকে প্রেসিডেন্টের ব্যবহারের উপযোগী করে তুলবে।

মার্কিন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সিক্রেট সার্ভিসের কর্মকর্তারা এই ধরনের প্রস্তাবকে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, বিদেশি সরকার থেকে পাওয়া একটি বিমান প্রেসিডেন্টের ব্যবহারের জন্য নেওয়া হলে তাতে নজরদারির সরঞ্জাম থাকার সম্ভাবনা থাকে। ফলে বিমানটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক পরীক্ষার প্রয়োজন হবে।

বর্তমানে, কাতার সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট আইনি বিভাগগুলোর পর্যালোচনার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *