যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত কর হ্রাস এবং বাজেট বিষয়ক বিলটি নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। এই বিলটি পাশ করানোর জন্য দলের মধ্যে ঐক্যের অভাব ট্রাম্পের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবার ক্যাপিটল হিলে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন ট্রাম্প। তিনি দলের সদস্যদের প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানান এবং বিলটি দ্রুত পাস করার উপর জোর দেন। খবর সূত্রে জানা যায়, মে মাসের শেষ নাগাদ বিলটি পাসের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই বিল নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে প্রধান মতবিরোধগুলো হলো স্বাস্থ্যখাত বিষয়ক মেডিকয়েড, রাজ্য ও স্থানীয় কর এবং জাতীয় ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি। দলের কিছু সদস্য এই বিলের কিছু অংশের তীব্র বিরোধিতা করছেন।
তারা মনে করেন, এর ফলে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার কেউ কেউ রাজ্য ও স্থানীয় করের উপর ছাড়ের পরিমাণ নিয়ে অসন্তুষ্ট।
হাউস স্পিকার মাইক জনসন মে মাসের মধ্যে বিলটি পাস করার চেষ্টা করছেন। তবে দলের কট্টরপন্থী এবং উদারপন্থী উভয় অংশের সদস্যদের বিরোধিতার কারণে তার কাজটি কঠিন হয়ে পড়েছে।
কিছু রিপাবলিকান সদস্য এই বিলের বিস্তারিত আলোচনার জন্য আরও বেশি সময় চেয়েছেন। তাদের মতে, তাড়াহুড়ো করে বিল পাস করার ফল ভালো হবে না।
অন্যদিকে, ট্রাম্প চান দ্রুত বিলটি পাস হোক। তিনি মনে করেন, এই বিল তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য হলো কর হ্রাস এবং ওভারটাইম-এর উপর কর মওকুফ করা। তবে দলের মধ্যে ঐকমত্যের অভাবের কারণে বিলটি পাস করানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিল পাসের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, আগামী দশ বছরে ঋণের পরিমাণ ২০ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ২শ’ কোটি কোটি টাকা।
এই পরিস্থিতিতে বিলটি নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ছে।
রিপাবলিকান দলের মধ্যে এই বিভেদ প্রমাণ করে যে, একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ঐকমত্য তৈরি করা কতটা কঠিন। বিভিন্ন অংশের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা এবং রাজনৈতিক বিভাজন একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
এখন দেখার বিষয়, ট্রাম্প দলের মধ্যে ঐক্য ফিরিয়ে আনতে পারেন কিনা এবং বিলটি শেষ পর্যন্ত পাস হয় কিনা।
তথ্য সূত্র: সিএনএন