শিরোনাম: ট্রাম্পের ‘প্রতিশোধের রাজনীতি’: ভিন্নমতের কণ্ঠরোধের চেষ্টা?
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ভিন্নমত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন সহ বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপগুলো তার সমালোচকদের ভীত করে তুলেছে।
খবরে প্রকাশ, ট্রাম্প তার আগের মেয়াদের কর্মকর্তাদের ওপর প্রতিশোধ নিতে উঠেপড়ে লেগেছেন। এর অংশ হিসেবে, তিনি তার সাবেক প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ফেডারেল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। যারা তার নীতিগুলোর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন, তাদের কোণঠাসা করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, ট্রাম্প তার বিরোধীদের প্রতিনিধিত্ব করা আইন সংস্থাগুলোর কাছ থেকে বিনামূল্যে কাজ আদায় করতে চাইছেন এবং বিচারকদের অভিশংসনের হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি অভিবাসন নীতির বিরোধিতা করায় কিছু শহরের সরকারি দপ্তর বন্ধ করে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপের মূল বার্তা হলো, তার দ্বিতীয় মেয়াদে ভিন্নমতকে কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সমালোচকদের দমন করতে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।
উদাহরণস্বরূপ, ক্রিস ক্রেবস, যিনি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে সাইবার নিরাপত্তা ও অবকাঠামো নিরাপত্তা সংস্থার (CISA) প্রধান ছিলেন, তিনি ২০২০ সালের নির্বাচনকে নিরাপদ ও ত্রুটিমুক্ত বলেছিলেন। ট্রাম্প এখন তাকেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, ক্রেবস মিথ্যাভাবে ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপির কথা অস্বীকার করেছেন।
এছাড়াও, ট্রাম্পের সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাবেক হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্মকর্তা মাইলস টেইলরকেও নিশানা করা হয়েছে। টেইলর প্রথম মেয়াদে সরকারের অভ্যন্তরে ‘প্রতিরোধ’ গড়ে তোলার অভিযোগ তুলেছিলেন, যা ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে ছিল।
আইন সংস্থাগুলোর বিষয়ে ট্রাম্পের পদক্ষেপও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি তার বিরোধীদের আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে বিনামূল্যে কাজ করতে বাধ্য করছেন। এর মাধ্যমে তিনি তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন এবং যারা তার বিরোধিতা করবে, তাদের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করছেন।
বিভিন্ন শহরে ফেডারেল অফিস বন্ধ করার সিদ্ধান্তও ট্রাম্পের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের অংশ। যেসব শহর অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে রাজি নয়, সেখানে সরকারি দপ্তর বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আটলান্টা, বোস্টন, শিকাগো, ডেনভার, নিউইয়র্ক সিটি এবং সিয়াটলের মতো শহরগুলো এর শিকার হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি গাজায় যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভের কারণে শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের মতো ঘটনাও ঘটছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপগুলো ভিন্নমত দমনের উদ্দেশ্যে নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে, যুক্তরাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অনেক সমালোচক আশঙ্কা করছেন, এর মাধ্যমে একটি ভয়ের পরিবেশ তৈরি হবে, যেখানে সরকারের সমালোচনা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন