মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনে প্রতিশোধের নেশায় বিভোর ছিলেন। ক্ষমতা ফিরে আসার পরেই তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেন, যা ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই সময়ে, ট্রাম্পের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেধন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন।
ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই ট্রাম্প তার রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরপরই তিনি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
এই ঘোষণার পর, অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ট্রাম্প তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের নেশায় মেতে উঠবেন।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের নীতির তীব্র সমালোচনা করেন এবং তার ক্ষমতা প্রয়োগের পদ্ধতির বিরোধিতা করেন।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকেই তাদের উদ্বেগের কথা জানান এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।
ট্রাম্পের প্রতিশোধের অংশ হিসেবে, তিনি তার সমালোচক এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে একের পর এক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, তার প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করা, বিভিন্ন তদন্তের নির্দেশ দেওয়া এবং গণমাধ্যম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
তিনি তার বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগও করেন।
ট্রাম্পের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজন আরও তীব্র হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভর্তির নীতি পরিবর্তন এবং গবেষণা খাতে বরাদ্দ কমানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেন।
এছাড়াও, তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আইন সংস্থাগুলোর সরকারি ভবনে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেন।
তবে, ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপের কারণে তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে বলে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে। সিবিএস নিউজ/ইউগভ-এর এক জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির কারণে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে বলে মনে করেন এমন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে।
তাছাড়া, তার বাণিজ্য নীতি নিয়েও অনেকে অসন্তুষ্ট।
ট্রাম্পের এসব বিতর্কিত পদক্ষেপ এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পের এই ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগের কারণে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও আইনি কাঠামোতে পরিবর্তন আসতে পারে।
তবে, এই পরিবর্তনগুলো কতটুকু স্থায়ী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতির প্রভাব আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্য চুক্তির ওপরও পড়তে পারে, যার মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কও অন্তর্ভুক্ত।
তথ্যসূত্র: সিএনএন